রহমত ডেস্ক 10 April, 2022 06:27 PM
প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সঙ্গে জোর-জবরদস্তি নয় বরং তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। রোববার (১০ এপ্রিল) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান তরুণীকে বাসায় বন্দি করে রাখার অভিযোগে রিটের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস শুনানি করেন। এ সময় কানাডিয়ান হাই কমিশনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আদালত বলেন, সন্তানকে ভালোবাসা দিয়ে শাসন করতে হবে। বাবা-মাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ওই তরুণীর ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সে কানাডায় গিয়ে পড়তে চাইলে তাকে সেই সুযোগ দিতে হবে। তাকে বাধা দেওয়া যাবে না।
শুনানিতে আদালত বলেছেন, বাবা-মাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। হঠাৎ করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। সে (তরুণী) কানাডা যেতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া যাবে না। চাইলে তার বাবা-মাও সন্তানের সঙ্গে কানাডা যেতে পারবেন। ভিসা প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে তার বাবা মায়ের কাছেই থাকবে। তাকে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইলসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু দিতে হবে। এ সময় আদালত বলেন, কানাডার যে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে সেখানে সেশন ফি পরিশোধ করে আবারো অধ্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। আপনারা তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখবেন। কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল রাজধানীর উত্তর মুগদায় ১০ মাস ধরে গৃহবন্দি থাকা ১৯ বছরের কানাডিয়ান তরুণীকে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ১৯ বছরের তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
রিটের নথি থেকে জানা যায়, ১৯ বছরের ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। তার বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানি ও মা সব সময় বাসায় বন্দি করে রাখেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ড ফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাই কমিশনকে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর কানাডিয়ান হাইকমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র হাইকোর্টে রিট করে। রিটে পুলিশের আইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুগদা থানার ওসি, ওই তরুণীর বাবা-মাকে বিবাদী করা হয়।