মূল পাতা আন্তর্জাতিক জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বাদ পড়ল রাশিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 08 April, 2022 06:38 AM
ইউক্রেনে গণহারে এবং পরিকল্পিতভাবে নিপীড়ন এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার আমেরিকার উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ৯৩টি। বিপক্ষে পড়ে ২৪ ভোট। ৫৮ দেশ ভোট দান থেকে বিরত থাকে।
প্রস্তাবে বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনের বেসামরিকদের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। তারই অংশ হিসেবে চালানো হচ্ছে হত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞ।
জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের ৪৭ সদস্যের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বাদ দিতে প্রস্তাবের পক্ষে ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন ছিল। ৫৮ দেশ ভোট দান থেকে বিরত থাকায় তাদের অনুপস্থিত বলে বিবেচনা করা হয়। ফলে প্রস্তাবের পক্ষে ৯৩ ভোট পড়ায় তা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ওঠা আগের দুইটি প্রস্তানে চীন ভোট দানে বিরত থাকলেও আজ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ভোটের আগে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, ‘‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এভাবে তাড়াহুড়ো করা, যেটা সদস্য দেশগুলোকে একটি পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য করছে। যা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিভেদ বাড়িয়ে তুলবে।”
প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে- ইরান, আলজেরিয়া, বেলারুশ, বলিভিয়া, বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, ইথিউপিয়া, গ্যাবন, কাজাখস্তান, লাওস, কিরগিজস্তান, মালি, নিকারাগুয়া, রাশিয়া, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ে।
মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা সৌদি আরব, সংযু্ক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, ইরাক, ওমান, কাতার, সুদান, ইয়েমেনহ ৫৮টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত তৃতীয় রেজ্যুলেশন এটি। রাশিয়ার নিন্দা জানানোর আগের দুইটি প্রস্তাবের পক্ষে ১৪১ এবং ১৪০ ভোট পড়েছিল।
কোনো দেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তিন বছরের জন্য সদস্য পদ পায়। রাশিয়া তার মেয়াদের দ্বিতীয় বছরে ছিল। মানবাধিকার কাউন্সিল কোনো দেশকে তাদের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করতে পারে না। তবে তাদের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা বলে বিবেচিত হয়। এছাড়া, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্তের অনুমোদন দিতে পারে।
মস্কো এই কাউন্সিলের সব থেকে সরব সদস্যদের একজন ছিল। এখন বরখাস্ত হওয়ার কারণে তারা মতামত দেয়া বা ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে না। তবে রুশ কূটনীতিকরা এখনো কাউন্সিলের বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন।
-পার্সটুডে