রহমত ডেস্ক 06 April, 2022 09:14 PM
বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। এবার শোলাকিয়ায় ১৯৫তম ঈদুল ফিতরের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। এবার ঈদ জামাতে জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, বিচার বিভাগ, জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মুসল্লি এসে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হবে ধরাণা করা হচ্ছে।
আজ (৬ এপ্রিল) বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক চিন্তাবিদ বাংলাদেশে ইসলাহুল মুসলিহিন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। তার বিকল্প হিসেবে বড় বাজার মসজিদের খতিব মাওলানা মো. সোয়েবকে নামাজ পড়ানোর জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এবারের জামাত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মাঠ প্রস্তুত, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিষ্কাষন, আইন-শৃংখলা ও নিরাপত্তা, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, মুসুল্লিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত, মাঠে আধুনিক শব্দযন্ত্র স্থাপন, মাঠ সুসজ্জিতকরণ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আগত মুসুল্লিদের ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা, শহর সজ্জিতকরণসহ নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে জঙ্গি হামলার ঘটনা মাথায় রেখে এবার ঈদুল ফিতরের জামাতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, শোলাকিয়া মাঠকে নিরাপত্তা চাদরে ডেকে দেওয়া হবে। এজন্য ব্যাপক সংখ্যক পুলিশসহ সাদা পোষাকে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম মাঠের চারদিকে অবস্থান করবে। পাশাপাশি বিজিবি, র্যাবসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর একাধিক চৌকস দল মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। ঈদের আগের রাত থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মাঠে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেটাল ডিডেকটর দিয়ে সারা মাঠ তল্লাশি করবেন। মাঠের ২৮টি গেটে মেটাল ডিডেকটর দিয়ে তল্লাশি করে মুসল্লিদের প্রবেশ করানো হবে। এছাড়াও মাঠে বিজিবিসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবকিছু বলা যাবে না।
১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটেছিল। সোয়া লাখ থেকেই এ মাঠের নাম শোলাকিয়া হয়েছে। দিন দিন এর প্রচারণা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছরই মুসল্লির সমাগম বাড়ছে।