রহমত ডেস্ক 04 April, 2022 08:28 PM
ছয় মাস ধরে নিখোঁজ স্বামী ইমাম মেহেদী হাসান ডলারকে (৩০) ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে স্ত্রী মুনতাহেনা পিংকি বলেছেন, আমার স্বামী মেহেদী হাসান ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পারিবারিক ইটভাটা ব্যবসার পাশাপাশি ফিশারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমার শ্বশুর লাল মাহমুদ লালু ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমার স্বামীও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।আজ (৪ এপ্রিল) সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুনতাহেনা পিংকি বলেন, আমার স্বামী একজন সুশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি। তিনি লেখাপড়া শেষ করে পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হন। মেহেদী হাসানের পরিবার ফুলবাড়ীয়ায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পরিবার হিসেবে সুপরিচিত। গত বছরের ৬ নভেম্বর ফুলবাড়িয়া উপজেলার ছনকান্দা বটতলা এলাকায় ফিশারি প্রজেক্ট থেকে বাড়ি ফেরার সময় নিখোঁজ হন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকটি সূত্র থেকে জানতে পারি, বিকেল ৫টায় একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস এবং দুটি মোটরসাইকেলে একদল লোক তাকে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ৮ নভেম্বর ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের সন্দেহ প্রশাসনের লোকই আমার স্বামীকে তুলে নিয়েছে। র্যাবের একটি টিম ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের বাসা থেকে রাত ২টার দিকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেওয়া হয়। বলা হয়, গোপন বৈঠক থেকে তাকে ধরা হয়েছে। তার কাছে ইসলামি বই পাওয়া গেছে ইত্যাদি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সেই মামলায় আমার স্বামী জামিনে রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর আমি প্রথমে ময়মনসিংহ র্যাবের কাছে অভিযোগ দিতে গিয়েছি তারা নেয়নি। তারা বলেছে, কয়েকদিন পর এমনিতে চলে আসবে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে প্রথমে আমি থানায় জিডি করেছি। এরপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেছি, এরপর পর্যায়ক্রমে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিখোঁজ আবেদন করেছি। ৩০ নভেম্বর আবেদনের পরও ৫ মাস অতিবাহিত হচ্ছে কিন্তু আমার স্বামীর কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। আমার দুটি ছোট সন্তান রয়েছে (এক মেয়ে ও এক ছেলে)। একজনের বয়স সাড়ে তিন বছর এবং আরেক জনের ১৪ মাস। আমার অবুঝ সন্তানরা যখন তাদের বাবাকে খোঁজে, তখন আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই।
ইমাম মেহেদী হাসান ডলারের ছোট ভাই রিজভী আহমেদ নিশাত বলেন, র্যাব, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কেউ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি।