| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক গরু-ছাগল পালনে লাইসেন্স ও জেল-জরিমানার বিধান রেখে গুজরাটে নতুন আইন পাস


গরু-ছাগল পালনে লাইসেন্স ও জেল-জরিমানার বিধান রেখে গুজরাটে নতুন আইন পাস


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     01 April, 2022     09:10 PM    


ভারতে বিজেপিশাসিত গুজরাটে রাস্তায় বেওয়ারিশ পশুদের বিচরণ রোধে বিধানসভায় একটি বিল পাস হয়েছে। এবার থেকে শহরগুলোতে এ ধরনের পশু রাখতে লাইসেন্স লাগবে। লাইসেন্স ছাড়া পশু রাখার চেষ্টা করলে জেলে যেতে হতে পারে।  

হিন্দি গণমাধ্যম ‘আজতক’ সূত্রে প্রকাশ, বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বিধানসভায় ‘গুজরাট ক্যাটল কন্ট্রোল (কিপিং অ্যান্ড মুভিং) ইন আরবান এরিয়াস বিল’ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, তারপর দীর্ঘ বিতর্কের পর শুক্রবার (০১ এপ্রিল) তা পাস হয়।

আইন অনুযায়ী, যতগুলো পশু পালনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, কেবল ততগুলো পশু রাখা যাবে। বাকিটা বিক্রি করতে হবে বা কাউকে দেওয়া যাবে। এ ছাড়া পশুকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে হলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন নিতে হবে। বিলটির নাম গুজরাট ক্যাটল কন্ট্রোল (কিপিং অ্যান্ড মুভিং) ইন আরবান এরিয়াস বিল। বিরোধী দল কংগ্রেস এর বিরোধিতা করে। কংগ্রেস একে কালো আইন বলেছে এবং রাজ্যে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার হুমকিও দিয়েছে। 

নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বিনোদ মোরাদিয়া বলেন, এই আইন গরু, মহিষ, ষাঁড় ও ছাগল পালনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, নগরীতে এগুলো পালনে সমস্যা হচ্ছে কারণ অনেক জায়গায় মালিক তাদেরকে রাস্তার উপর খোলা জায়গায় ছেড়ে রাখে। মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের বেওয়ারিশ পশুর কারণে অনেক সময় মানুষের প্রাণও চলে গেছে।

বিনোদ মোরাদিয়া আরও বলেন, এমনও দেখা গেছে যে একটি বিপথগামী গরু রাস্তায় প্লাস্টিক খায়, যার কারণে সেটি মারাও যায়। বলা হয়েছে, নগরীতে কাউকে গরু, মহিষ, ষাঁড় বা ছাগল পালন করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। যে শহরগুলোতে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আহমদাবাদ, রাজকোট, সুরাট, ভাদোদরা, গান্ধীনগর, জুনাগড়, ভাবনগর এবং জামনগর। ১৫৬টি শহরেও কঠোরতা করা হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে তার পশু ট্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের সড়কে অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে হবে।

গুজরাট বিধানসভায় পাস হওয়া বিল অনুসারে, যদি ১৫ দিনের মধ্যে পশুর ট্যাগিং করা না হয় তবে এক বছরের জেল হতে পারে, এর পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা  জরিমানা বা উভয় দণ্ডও দেওয়া যেতে পারে। এর পাশাপাশি শহরগুলোতে এই পশুদের জন্য খাদ্য পাওয়া যাবে না। পশুকে খোলা অবস্থায় দেখা গেলে বা লাইসেন্স না থাকলে জেলও হতে পারে। এটি করতে ব্যর্থ হলে এক বছরের কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। বন্দী পশুর ট্যাগিং করা হলে মালিকের বিরুদ্ধে প্রথমবার ৫ হাজার, দ্বিতীয়বার ১৫ হাজার এবং তৃতীয়বার এফআইআর করা হবে। অন্যদিকে, পশু ট্যাগ না করলে প্রশাসনের লোকজন তা চিরতরে নিয়ে যাবে এবং ৫০ হাজার জরিমানাও করবে।   

বিরোধী কংগ্রেস বিধায়ক রঘু দেশাই এবং লাখা ভারওয়াদ, উভয়ই মালদারি বা গবাদি পশুপালক সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, তারা সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন, বিলটি প্রত্যাহার না হলে তারা রাজ্যব্যাপী আন্দোলন শুরু করবে। রঘু দেশাই বলেন, রাজ্যে ৫০ লাখ গবাদি পশু পালনকারী রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ দরিদ্র এবং নিরক্ষর। গবাদি পশু পালন আমাদের মৌলিক অধিকার এবং এই বিল তার ওপর সরাসরি আক্রমণ। এই বিল আমাদের বাস্তুচ্যুত করার ষড়যন্ত্র। আমরা চুপ থাকব না। আমরা এই কালো কাজের বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী আন্দোলন শুরু করব।

বিধায়ক লাখা ভারওয়াদ বলেছেন, 'বিজেপি গরুর নামে ভোট নিয়েছে এবং এখন তার সরকার চায় মানুষ গরু রাখার লাইসেন্স নিক। এই বিল শুধুমাত্র আমার সম্প্রদায়ের অহেতুক হয়রানির কারণ হবে। আমি চাই আপনারা অবিলম্বে এই বিল প্রত্যাহার করুন।'  

-পার্সটুডে