রহমত ডেস্ক 27 March, 2022 11:01 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য বখাটে ও পাড়া-মহল্লার মাস্তানদের মতো। রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কথাবার্তা শুনলেই বোঝা যায় দেশের কী ভয়ংকর অবস্থা! ডিএমপি কমিশনার খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যিনি স্বাধীনতার ঘোষক ও বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী সেই নেত্রী সম্পর্কে যে অশ্লীল অসভ্য কথাবার্তা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। আমার কাছে মনে হয়েছে শেখ হাসিনা যেমন তার বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করতে কোনো ধরনের সভ্যতার যে পরিসীমা সেটা যেমন মানেন না, ঠিক একই ভাষায় কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। এই কমিশনার তো খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালিনও চাকরি করেছেন।
রবিবার (২৭ মার্চ) বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন-জেডআরএফ আয়োজিত বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে গুম খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের বাৎসরিক শিক্ষা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও জেডআরএফের রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির সদস্য সচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ। ঝিনাইদহের মনিরুজ্জামান মিন্টু, ইন্তা মন্ডল ও সিরাজুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের হাতে বৃত্তির টাকা ও পোশাক তুলে দেয়া হয়। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় গুম খুনের পরিবারের সদস্যদেরকে সহায়তা দেবে জেডআরএফ।
ডিএমপি কমিশনারের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, শুনেছি যে ওনার (ডিএমপি কমিশনার) এক্সটেনশন হয়েছে। আবার পরবর্তীতে এক্সটেনশন নেওয়ার জন্যই কি? শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য এ কথাগুলো বলেছেন? আমলাদেরকে বলা হয় একটি রাষ্ট্রের স্টিল ফ্রেম। আর সেই স্টিল ফ্রেম আজকে দেখছি একেবারে গদগদ হয়ে প্রশংসা করছে একটি অবৈধ সরকারের। আর সেটি করতে গিয়ে সভ্যতা, ভব্যতা, সুরুচি সবকিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে বখাটে পাড়া-মহল্লার মাস্তানরা যেভাবে কথা বলে সেভাবেই পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার মুখ থেকে যদি এমন কথা বের হয় তাহলে এটা কত বড় ন্যক্কারজনক হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, একটি রাষ্ট্রের চরিত্র কেমন তার চেহারা কেমন এটা যদি আপনারা বুঝতে চান তাহলে দেখতে হবে ওই রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বৈশিষ্ট্য কেমন? এটা দেখলেই রাষ্ট্রের চরিত্রটা বোঝা যায়। আজকে দেখুন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের কথাবার্তা তাদের আচার-আচরণেই বুঝতে পারবেন এই রাষ্ট্র কী ভয়ঙ্কর! আজকে দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের এক কর্মকর্তা যার নিরপেক্ষ ও চুপচাপ থাকার কথা; তিনি যে কথা বলেছেন শনিবার এটা আমার কাছে মনে হয়েছে এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে চাকরি জীবনে অনুকম্পা পাওয়ার আশায় সভ্যতা-সংস্কৃতি সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ডিএমপি কমিশনার এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও আপত্তিকর। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবির বিষয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম শনিবার বলেন, ‘একটি পার্টির খুব সিনিয়র এক নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর...। যাকে তার স্বামী পরিত্যক্ত করে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ওখানে কী করছ...। আর এখন সে নাকি বড় মুক্তিযোদ্ধা। আর না বলি। ’