রহমত ডেস্ক 26 March, 2022 03:03 PM
রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিনে মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে রেকর্ড সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালটির তথ্য মতে, শুক্রবার (২৫ মার্চ) এবং শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন করে ১ হাজার ৪০১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী ও উত্তরা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে।
আজ (২৬ মার্চ) শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে আইসিডিডিআর,বির মিডিয়া ম্যানেজার তারিফ হাসান জানান, শুক্রবার (২৫ মার্চ) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ১ হাজার ১৩৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরপর রাত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নতুন ৪৮ জন, ২টা পর্যন্ত ৭৪ জন, ৩টা পর্যন্ত ৯৮ জন, ৪টা পর্যন্ত ১২০ জন, ভোর ৫টা পর্যন্ত ১৪০ জন, ৬টা পর্যন্ত ১৬১ জন, ৭টা পর্যন্ত ২০২ জন এবং সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৬৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে।
শুক্রবার হাসপাতালটির মিডিয়া বিভাগ সূত্র জানায়, আগের দুই দিনে হাসপাতালটিতে দুই হাজার ৪০৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত পর্যন্ত এক হাজার ১৭৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর,বি-তে এসে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের দিনও (২৩ মার্চ) রাত পর্যন্ত এক হাজার ২৩৩ জন রোগী ভর্তি হন।
বুধবার (২৩ মার্চ) হাসপাতালটির মিডিয়া বিভাগ সূত্র জানিয়েছিল, গত সাত দিনে ৮ হাজার ১৫২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগে গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এরকমই একটি প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যা একেবারে মহামারির রূপ ধারণ করে। সেটি স্থায়ী হয়েছিল মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।দৈনিক ১২-১৩শ ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছেন। যাদের অধিকাংশকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আইসিডিডিআর,বির ঢাকা ও চাঁদপুরে অবস্থিত মতলব হাসপাতাল প্রতি বছর দুই লাখেরও বেশি রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বছরে দুইবার বাড়ে। শীতের সময় আর গরমের সময়ে। সাধারণত প্রতিদিন সাড়ে তিনশ থেকে চারশ রোগী থাকলেও রোগী বাড়লে সর্বোচ্চ এক হাজারের মতো হয়। কিন্তু এবারই এটা ১ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। গরমে ওই জীবাণুটি অনুকূল পরিবেশ পায়। এই সময়ে জীবাণু বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে। তাছাড়া গরমের সময় অনেকে অনিরাপদ পানি পান করেন। এতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমাদের পরামর্শ হলো, বাইরের কোনো খাবার খাবেন না। যেখান সেখান থেকে পানি খাবেন না। পানি যদি খেতে হয় তাহলে সেটি ফোটানো হতে হবে। অন্যথায় নিশ্চিত হতে হবে পানি জীবাণুমুক্ত। সেইসঙ্গে করোনাকালীন সময়ের দুই বছরে হাত ধুয়ার যে একটা ভালো অভ্যাস তৈরি হয়েছিল, এটা বজায় রাখতে হবে।