রহমত ডেস্ক 08 March, 2022 02:00 PM
কখনও মুফতি, হাফেজ আবার ইমাম পরিচয় দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে প্রতারণাকারী চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। গ্রেপ্তাররা হলেন, আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), মো. কামরুল কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)। তাদের কাছ থেকে ১৬টি বিভিন্ন অপারেটরের সীমসহ ৮টি মোবাইল জব্দ করা হয়। গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগাং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের ডাইরেক্টরি বইসহ সর্বমোট ৫০টি ডাইরেক্টরি জব্দ করা হয়।
আজ (৮ মার্চ) মঙ্গলবার রাজধানীর মগবাজার সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে নামের সঙ্গে মুফতী ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার পূর্বক বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের নিকট ফোন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গল্প সাজিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। তারা কখনো মসজিদের মোয়াজ্জেম বা তার স্ত্রী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে এমন সব ভুয়া তথ্য দিয়ে হাসপাতালের বড় অংকের চিকিৎসা খরচ প্রদান করতে না পারায় হাসপাতাল থেকে লাশ বের করে দাফন-কাফন করতে পারছেন না এসব বলে সাহায্য সহযোগিতা চাইত। এরা টার্গেটকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা ও পদবী জেনে নিকটস্থ বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দেয়। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল।
অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, বিভিন্ন পেশার মানুষ এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর তাদের আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের নিকট হতে বিভিন্ন ক্লাবের ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সম্বলিত ডাইরেক্টরি বই উদ্ধার করা হয়। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের ডাইরেক্টরি বইসহ সর্বমোট ৩৫টি ডাইরেক্টরি জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আসামিরা এমন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে এ চক্রের মূলহোতা মো. শওকতের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিতো। বর্তমানে আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সিআইডি হেফাজতে আছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা।