রহমত ডেস্ক 07 March, 2022 04:47 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ এখনও রক্ত কণিকায় কাঁপন ধরায়। মুগ্ধ মনোযোগে এখনও কোটি বাঙালি শোনে ‘রাজনীতির কবি’র সেই অমর কাব্যগাঁথা— যা অর্ধশত বছর পরও কত জীবন্ত, কত কাব্যিক। রক্ত কণিকায় এখনও কাঁপন ধরায় সেই ভাষণ। সেই শব্দমালা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শব্দ কর্তৃত্ব করে, নেতৃত্ব দেয়, দ্যুতি ছড়ায়, বিদ্রোহে রসদ যোগায়। শব্দ কোটি মানুষকে গ্রন্থিত করে এক সূত্রে। হাজার পূর্বপুরুষের রক্তের প্রতিশোধ নিতে কম্পন তোলে অস্তিত্বে। আর এ কম্পনের অপর নাম ৭ই মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এবারের এই মার্চ জাতি পালন করেছে হৃদয়ের সবটুকু আবেগ, উচ্ছ্বাস আর শপথের বলিষ্ঠতায়। জাতি স্মরণ করেছে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের সেই অবিনাশী কণ্ঠের বজ্রনিনাদ।
আজ ( ৭ মার্চ ) সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এতে সভাপতিত্ব করেন। এছাড়াও আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ,সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।গণভবন প্রান্ত থেকে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জয় বাংলা’ সতের কোটি মানুষের প্রাণের স্লোগান। ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানের মাধ্যমে বাঙালি পেয়েছিল স্বাধীনতার শক্তি। আজ এ শ্লোগান ধারণ করে এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মানুষ দেশ গঠনে উজ্জীবিত হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আজ যারা কথায় কথায় মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার কথা বলে তারাই বঙ্গবন্ধু এই ঐতিহাসিক ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের কত অত্যাচার নির্যাতন অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এখনো বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে আরেকটি কঠিন লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল প্রত্যাশা জাগানিয়া স্ফুরণ। মহান স্বাধীনতা অর্জনের পথনকশা। আর অর্ধশত বছর পর তারই সুযোগ্যকন্যা সে প্রত্যাশা পূরণের সোনালী দিগন্তের উন্মোচক। তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে, স্বল্পোন্নত দেশের সিঁড়ি বেয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সেরা ভাষণগুলোর চেয়ে অধিক বৈশিষ্ট্য মন্ডিত ছিল বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ। একটি ভাষণে নিখাদ মৌলিকত্বের সঙ্গে জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার কাব্যিক ঘোষণা সত্যিই ইতিহাসে বিরল। এ ভাষণের পর বিশ্ববিখ্যাত সাময়িকী ‘দি নিউজ উইক’ বঙ্গবন্ধুকে ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ বা ‘রাজনীতির কবি’ অভিধায় অভিষিক্ত করে। দেশ-কালের সীমানা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে জাতিসংঘের ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুধু তাৎক্ষণিক প্রয়োজন নয়, ৭ই মার্চের ভাষণে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবিক ঔদার্য, সামরিক কৌশল ও রাজনৈতিক আন্দোলন সংঘটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে চিরকালীন ও সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত।