| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ‘বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্তের প্রত্যয়ও মেরাজের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা’


‘বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্তের প্রত্যয়ও মেরাজের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা’


রহমত ডেস্ক     25 February, 2022     05:48 PM    


মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেন, বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সীরাতের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় ইসরা ও মেরাজ। মুমিনের আবেগ, অনুভূতি, ভক্তি ও বিশ্বাসের সাথে মিশে আছে ইসরা ও মিরাজের সত্যতা। ইসরা অর্থ নৈশভ্রমণ, রাত্রিকালীন ভ্রমণ। মেরাজ অর্থ সিঁড়ি, ঊর্ধ্বলোকে গমন, মই ইত্যাদি।  আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতের একটি অংশে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি। তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন। (সূরা ইসরা: আয়াত নং-১)। বস্তুুত ইসরা হচ্ছে, মক্কা মুকাররমা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণকে যা রাতের একটি অংশে সংঘটিত হয়েছিল। আর সেখান থেকে ঊর্ধ্বজগৎ পরিভ্রমণের বিস্তৃত অধ্যায়কে মিরাজ বলে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, অবশ্যই তিনি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে (জিবরাঈল আলাইহিস সালামকে) আরও একবার দেখেছেন, সিদরাতুল মুনতাহার কাছে। তার পাশেই রয়েছে জান্নাতুল মাওয়া। (সূরা নাজম: আয়াত নং- ১৩-১৫)। ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারে কোরআনে সংক্ষেপে এতটুকুই বলা হয়েছে। বিস্তারিত বিবরণ বর্ণিত হয়েছে হাদীসের নির্ভরযোগ্য কিতাবগুলোতে। বিশুদ্ধ মতে ইসরা ও মেরাজ নবুওয়াতের ১১তম বছরের ২৬ রজব দিবাগত রাতে সংঘটিত হয়েছিল নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বয়স তখন ৫১ বছর। ইসরা ও মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল সশরীরে জাগ্রত অবস্থায়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হল কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকদের অস্বীকৃতি ও অবিশ্বাস। যদি আধ্যাত্মিক বা রূহানী ভাবে কিংবা স্বপ্নযোগে হওয়ার কথা বলা হতো, তাহলে তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না।

খতিব বলেন, মেরাজের ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখা। শিরক থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহর সাথে বান্দার আবদিয়াত তথা দাসত্বের সম্পর্ক আরও মজবুত করা। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া। কেননা এটা মিরাজে লাভ করা উম্মতের জন্য নবীজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোহফা। আল্লাহ তায়ালা ও বান্দার হকের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং গীবত, পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকা। মানুষের সম্ভ্রমহানি না করা। কাউকে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত না করা। কারণ এটা অনেক বড় কবীরা গুনাহ। জান্নাতের ব্যাপারে আগ্রহী এবং জাহান্নামের ব্যাপারে ভীত থাকা। হাউজে কাউসারের প্রত্যাশী হওয়া। সব ধরনের গুনাহ, বিশেষ করে মদ ও যেনা থেকে বেঁচে থাকা। যেই পবিত্র ও বরকতময় ভূমিতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইসরা ঘটেছে সেই বাইতুল মুকাদ্দাস ও জেরুযালেম আজ বেদখল। সেখানে প্রতিনিয়ত প্রবাহিত হয় আমার মুসলমান ভাইয়ের রক্ত। বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্ত করার দৃঢ. প্রত্যয় ও নিয়ত রাখাও ইসরা ও মেরাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমিন।