রহমত ডেস্ক 06 February, 2022 09:34 PM
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন কমিশন-ইসি গঠনে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আগামী শনিবার ও রবিবার তিনটি বৈঠক করবে সার্চ কমিটি। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত ও নাম চাওয়া হবে, তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হবে না। আজকে প্রথম বৈঠক ছিল। প্রথম বৈঠকে আমরা নিজেদের মধ্যে পরিচয়পর্ব শেষ করেছি। সোমবার থেকে ১৫ কার্যদিবস আছে। এর আগেই ইনশাআল্লাহ এটা করে দেওয়া হবে। যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে, তাদের কাছ থেকে আমরা নাম চাইবো, তাদের কোনো পছন্দ আছে কি না, প্রপোজাল আছে কি না। সেটা আজকে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কেবিনেট ডিভিশনের ইমেইল বা ওয়েবসাইটের দেওয়া হবে। ব্যক্তিগতভাবেও কেউ চাইলে নাম সাবমিট করতে পারবে।
আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) রবিবার সন্ধ্যায় সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক শুরু হয়। সার্চ কমিটির সভাপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সার্চ কমিটির সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী পরশু (মঙ্গলবার) আমরা আবার মিটিংয়ে বসবো। এছাড়া আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি- মোট আরও তিনটি মিটিং হবে। সিভিল সোসাইটি (সুশীল সমাজ) ও মিডিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ যারা আছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত যারা বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের নিয়ে কমিটি এ তিনটি মিটিংয়ে বসবে এবং তাদের কাছ থেকে সাজেসন্স (পরামর্শ) বা প্রপোজাল (প্রস্তাব) থাকলে নেওয়া হবে। তারপরে কমিটি সবার বক্তব্য এবং আইন ও অন্যান্য জিনিস দেখে, যেভাবে আইনে যোগ্যতার কথা বলা আছে সেগুলো বিবেচনা করে এবং আইন অনুযায়ী সিলেকশন করে ৫ জনের বিপরীতে ২ জন করে মোট ১০ জনের নাম দেওয়া হবে। আজ কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, ২৪ তারিখ পর্যন্ত টাইম আছে। যদি ১৪ তারিখের বিষয়ে কোনো আবশ্যকতা থাকে তাহলে সেটা করা হবে। পরশু (মঙ্গলবার) শুধু আমরা নিজেরা বসবো। বাকি তিন মিটিংয়ে সিভিল সোসাইটি ও মিডিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসবো। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসবো না। তারা ই-মেইলের মাধ্যমে নাম দিতে পারবে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেয়ার জন্য নাম সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২-এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেয়ার জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠন করা হলো। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুমোদন দেয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। আইনানুযায়ী, আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। সে অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।