ভোজ্যতেলের দাম আরো বাড়তে পারে : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভোজ্যতেল ব্রাজিল থেকে আমদানি করা হয়। তাই সেখানে দাম বাড়লে দেশে ভোজ্যতেলের দাম আরো বাড়তে পারে। আসন্ন রমজান ঘিরে বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে কাজ চলছে। রমজানে পণ্যের দাম প্রায় সময়ই বাড়ে। এবারের আসন্ন রমজান ঘিরে বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে কাজ চলছে। খোলাবাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো হবে। রমজানে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির পণ্য বিক্রির পরিমাণও ডাবল করা হবে।

আজ (২৯ জানুয়ারি) শনিবার বিকালে লালমনিরহাট শেখ শফি উদ্দিন কমার্স কলেজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। রোটারি ক্লাব লালমনিরহাটের প্রেসিডেন্ট অধ্যক্ষ এন্তাজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লালমনিরহাট জেলার জেলা প্রশাসক আবু জাফর, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. মতিয়ার রহমান, পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপন, চেম্বার সভাপতি এস এ হামিদ বাবু এবং জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী কলেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষ রোপন, মাস্ক বিতরণ ও বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন।

দেশের বাজারে ফের ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাম অয়েলের দামও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, নতুন আসা বোতলের এক লিটার তেলের গায়ের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৮৫ থেকে ৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি এখন খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, লালমনিরহাটের ব্র্যান্ডিং ফসল ভুট্টার চাষাবাদ ব্যাপক। তাই এ জেলায় ভুট্টাজাত শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। সেই সঙ্গে জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজও চলমান। সরকারের লালমনিরহাটের মোগলহাট স্থলবন্দর চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে মোগলহাট স্থলবন্দর চালু হলে উভয় দেশের বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। বন্ধ থাকা এ স্থলবন্দর চালু করারও পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। লালমনিরহাটে কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগের কারণে এ অঞ্চল থেকে মঙ্গা বিদায় নিয়েছে। একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। লালমনিরহাটে কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। যাতে করে এ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান ও আর্থিক অবস্থার উন্নতি এবং মানুষের জীবন যাত্রার পরিবর্তন হয়। তিস্তা নদী ঘিরে সরকার মহাপরিকল্প গ্রহণ করেছে। সরকার সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে তিস্তাপাড় তথা রংপুর বিভাগের যথেষ্ট উন্নতি ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে বেশ আন্তরিক। আমরা তারই নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে এখন শীত বেশি। শীতার্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। বর্তমান সরকার দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে কাজ করছে। দেশের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সে জন্য সবকিছু করা হচ্ছে। লালমনিহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কাজ চলছে, লালমনিহাটও আজ উন্নয়ন থেকে বাইরে নয়। দেশের গ্রামগুলো এখন শহরে পরিনত হচ্ছে। দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সকলের প্রচেষ্টা ও আন্তরিক ইচ্ছা ছাড়া এ মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়।