| |
               

মূল পাতা রাজনীতি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির


গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির


রহমত ডেস্ক     25 January, 2022     06:34 PM    


অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে বাংরাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। বিএনপি মনে করে, বর্তমান আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ। এর কোনো বিকল্প নেই।

আজ (২৫ জানুয়ারি) মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব জানান। গতকাল সোমবার দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী,  ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান

মির্জা ফখরুল বলেন, সংসদে ‘নির্বাচন কমিশন বিল-২০২২’ উত্থাপন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে বিএনপি সুনির্দিষ্টভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জনগণের সামনে প্রকাশ করেছে। বিএনপি মনে করে, যেহেতু এই সংসদ জনগণের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত নয়, ফলে এ ধরনের কোনো আইন প্রণয়নে বর্তমান সংসদের কোনো নৈতিক এখতিয়ার নেই। গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে এ আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা আর একটি পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশা মাত্র। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো নির্বাচনই অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও সফল হবে না, যদি না নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের এক তরফা সাজানো ভোটারবিহীন ও মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে দুর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এ পরিবর্তন আনতে হবে। সভায় বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের দায়ে ১২টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ মিশনে র‌্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার দাবী জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছে বিএনপি বিষয়টি পর্যালোচনা করে জাতিসংঘ খতিয়ে দেখবে এই মন্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। সভা মনে করে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, গুম, বিচার বর্হিভূত হত্যা কান্ডের জন্য র‌্যাবসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ভয়াবহ ঝুকির মধ্যে ফেলেছে এবং এর সুদুর প্রসারী প্রভাব বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির সকল দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহণ করতে হবে। করোনা টীকা দানের লক্ষ্য মাত্র নির্ধারিত ৭০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে আনায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে সরকার শুরু থেকেই করোনা টীকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং জনগণের স্বাস্থ্য বিপন্ন করেছে। সভায় করোনা পরিস্থিতি এবং টীকা প্রদানের বিষয়ে সঠিক চিত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করার আহ্বান জানানো হয়।

তিনি আরো বলেন, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বিবিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রথমে ছাত্রলীগের হামলা ও পরে পুলিশের হামলা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণের ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ন্যাক্কার জনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পরবর্তীতে ন্যায় সঙ্গত দাবীতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন ও সকল প্রকার আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানানো হয়। সভা মনে করে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারনেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে এবং প্রায় ১০ দিনেও এই সমস্যার সমাধান হয় নি। অবিলম্বে ভাইস চ্যান্সেলরসহ দায়ী সকল সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ছাত্রলীগ ও পুলিশের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। সভা মনে করে, অযোগ্য, চাটুকার ও দলীয় শিক্ষকদের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণের ফলে এই ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে এবং উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাকে মারাত্মক ভাবে অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দূর্নীতি, বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অসাদচারন ও দূর্নীতি দেশের উচ্চ শিক্ষাকে বিপন্ন করছে। অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ, যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিশন গঠন করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।