রহমত ডেস্ক 18 January, 2022 10:33 PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-শাবিপ্রবির বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক হলে তা মেনে নেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। আজ (১৮ জানুয়ারি) মঙ্গলবার দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি সামনে রেখে এই বৈঠক ডাকা হলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরিস্থিতিও পর্যালোচনায় আসে। এসময় শিক্ষামন্ত্রী শাবির ঘটনার রেশ ধরে যাতে কোনো ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, পুলিশ ডেকে সমস্যার সমাধান না করে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ক্যাম্পাস সচল বা বন্ধ করে অনলাইনে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে বলেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং অন্য জনবল টিকার আওতায় এসেছেন সেটি জানতে চান শিক্ষামন্ত্রী। উপাচার্যরা এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন। সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে টিকা নেওয়ার হার অনেক বেশি। তবে জাতীয় এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নেওয়ার হার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সুরক্ষার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। করোনা পরীক্ষা, মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার ব্যবস্থা, আইসোলেশন সুবিধা ইত্যাদি প্রস্তুত রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এসময় উপাচার্যরা শিক্ষার্থীদের জন্য টিকার বুস্টার ডোজের ব্যবস্থা করতে শিক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দেন।
বৈঠকে শাবি পরিস্থিতি আলোচনায় ছাত্রদের ওপর পুলিশি অ্যাকশনের বিষয়টি বেশ সময় ধরে আলোচনা হয়। সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বৈঠকে অবহিত করে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, খুবই ছোট একটি ঘটনা থেকে পরিস্থিতি এ পর্যায়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে যান। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই শান্তিপূর্ণ অবস্থায় তাদের দাবি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু কয়েকজন তার সঙ্গে অনাকাঙ্খিত আচরণ করলেও তাদের ধাওয়া দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে তাকে পার্শ্ববর্তী ভবনে যেতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে তা তিনি ভাবেননি। এ অবস্থায় আইসিটি ভবনে পুলিশ উদ্ধার করতে আসে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, শাবির ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। ছোট বিষয় দিয়ে শুরু, এখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ চান। যদিও এটা কোনো সমাধান নয়। অধ্যাপক ফরিদ আহমদ একজন দক্ষ উপাচার্য। চারবছর শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠান চালিয়েছেন। ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের যে ঘটনা সেটা অপ্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে উপাচার্য আদেশও দেননি। সাধারণত শিক্ষার্থীদের এমন ঘটনা প্রক্টর সামাল দেন। তিনি ব্যর্থ হলে সিনিয়র শিক্ষকরা হস্তক্ষেপ করেন। সবকটি বিকল্প ব্যর্থ হলে পুলিশ ডাকা হয়। এই ঘটনা থেকে অন্যদের শিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।