রহমত ডেস্ক 12 January, 2022 07:13 PM
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিদেশে বসে যারা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করছেন তাদের তালিকা করা হবে। সে তালিকা অনুযায়ী তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে। বিদেশে থেকে দেখা গেছে অনেকে এমন মিথ্যাচার করছে যেটা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সেটা বলতে পারে, কিন্তু রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও যেগুলো বলছে সেটা রাষ্ট্রদোহী। দুইটা জিনিস আমরা সবসময়ই প্রার্থক্য করি- একজন ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে বলতেই পারে। আরেকটা হল রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ (১২ জানুয়ারি) বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে দুপুরে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী এসব কাজ যারা বিদেশে বসে করছে, তাদের যাতে পাসপোর্ট বাতিল করা হয় সেজন্য আমরা পরামর্শ দিয়েছি। তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হোক, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সেগুলো কারা করছে, কী কী করছে এবং কোনোটা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যারা সক্রিয়ভাবে, অব্যাহতভাবে এ কাজ করে যাচ্ছে, তাদের পাসপোর্ট বাতিলের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুলিশ সদস্যের সে দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা বন্ধ করার বিষয়টি একটি ভুল বোঝাবুঝির জন্য হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভুল কিছু তথ্য দেখে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এই ভুল বোঝাবুঝি ঠিক হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের গ্রেফতার করা হলেও দুদিন পর জামিন পেয়ে বের হয়ে যায় তারা। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবকদের বিষয়ে আইন সহজ থাকে। সহজে তারা জামিন পেয়ে যায়। সে জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যাদেরকে ধরা হয় দেখা যায়, দুদিন পরেই তারা সব জামিন পেয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আমাদের আইনে কিছু দুর্বলতা আছে। ভবিষ্যতে সে দুর্বলতাগুলোর সুযোগ নিয়ে আইনে জামিনের যে অধিকার, সেটার যাতে অপপ্রয়োগ না হয় এবং আইনের যে ত্রুটি আছে, সেগুলো দূর করার জন্য আইন কীভাবে সংশোধন করা যায়, সে ব্যাপারেও আমরা কথা বলেছি, সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুইটা জিনিসে আমরা অনেক সময় কনফিউজড হয়ে যাই। একটা হল অ্যালকোহল বা মদ জাতীয় জিনিস। আরেকটা হল ড্রাগ। যেটা মানুষের জীবনী শক্তি শেষ করে দেয়। এ দুইটাকে আলাদা করে ড্রাগের জন্য যে কঠোর আইন আছে, সেগুলো যাতে আমলে আসে (আলোচনা হয়েছে), কারণ অ্যালকোহল আর ড্রাগ এক জিনিস নয়। এছাড়া সচেতনতার জন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা মাদক থেকে ফিরে আসে এমন মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের জন্য ভবিষ্যতে একটা বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া ধরা পড়া বা আটক হওয়া মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার রেকর্ড স্বচ্ছভাবে সংরক্ষণ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।