‘ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চালু করতে আরো কয়েক দফা ট্রায়াল প্রয়োজন’

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রানজিট চালু করতে আরো কয়েক দফা ট্রায়ালের প্রয়োজন রয়েছে। ট্রানজিট চালু করতে আমরা একটা ট্রায়াল করেছি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের বিষয় রয়েছে। সেজন্য আমরা ভারতের কর্তৃপক্ষকে বলেছি আমাদের আরও দুয়েকটা ট্রায়াল প্রয়োজন। সফল হলে পুরোপুরি চালু হবে। এটি নিয়ে সচিবালয়ে আলোচনা হয়েছে, যেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেও আমরা বলেছি, বাংলাদেশের স্বার্থটা আগে।

আজ (২ জানুয়ারি) রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে যুক্ত টাগবোট কাণ্ডারি-৬ ও বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টাগবোট, ওভার-ফ্লু ইয়ার্ড, সার্ভিস জেটি, সুইমিং পুল ও টেনিস কোর্ট-বাস্কেটবল গ্রাউন্ডসহ চট্টগ্রাম বন্দরের মোট পাঁচটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম. শাহজাহান, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সচিব মো. ওমর ফারুকসহ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উদ্বোধন হওয়া নিউমুরিং ওভার-ফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড ও দ্বিতীয় ওভার ফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ডে প্রায় চার হাজার টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার ধারণক্ষমতা রয়েছে। প্রথম প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৯৭ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৭৮ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কাজ করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিতে পারলে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। কাজের একটি অংশ বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি অংশ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে বাস্তবায়ন হবে।  বে-টার্মিনালে বিনিয়োগের জন্য জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করেছে। সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, তুরস্ক ও ডেনমার্ক যোগাযোগ করছে। আমরা যাচাই-বাছাই করছি তাদের প্রস্তাব। বন্দরের জন্য এবং দেশের জন্য যারা ভালো হবে তাদের কাজ দেবো। সব মিলিয়ে বলা যায়, আমাদের কার্যক্রম চলমান।তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের চালিকাশক্তি। আজকের বাংলাদেশের যে উন্নয়ন চলছে, তার গেটওয়ে হচ্ছে এই বন্দর। এটি নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা মহামারিতেও পণ্য ও কনটেইনার হ্যান্ডিলিং অব্যাহত রেখেছে বন্দর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্দরে যেখানে জট লেগে আছে, সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যতিক্রম। গেল বছরে এই বন্দরে ইতিহাসের রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর মেরিটাইম সেক্টর নিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যুদ্ধবিধ্বস্তের পর তিনি চট্টগ্রাম বন্দর পুনর্গঠন করেছিলেন। এই সেক্টর নিয়ে জাতিসংঘ যে পরিকল্পনা নিয়েছে, বঙ্গবন্ধু তার ১০ বছর আগে একই পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের উন্নয়ন থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার সুযোগ্য কন্যা পুনরায় সেই উন্নয়নের গতি ফিরিয়ে এনেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আমলেই চারটি মেরিন একাডেমি করা হয়েছে।