রহমত ডেস্ক 02 January, 2022 10:39 PM
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির ডাকা চলমান সংলাপে অংশ নেবে না বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। রবিবার (২ জানুয়ারি) দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে (সিপিবি) আমন্ত্রণ জানান। ১ জানুয়ারি সিপিবি থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো পত্রে জানানো হয়, আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিপিবি নেতারা চিঠিতে সংলাপে অংশগ্রহণের অপারগতার কথা জানান।
সিপিবি পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। কিন্তু অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সেটাই যথেষ্ট নয়। নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক গলদ দূর করতে না পারলে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। এই মৌলিক বিবেচনা থেকে সিপিবি নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের জন্য ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বসহ ৫৩টি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের সুপারিশমালা ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে আপনার কাছে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায়, হুবহু একই আলোচ্যসূচিতে ও একই প্রকরণের আরেকটি সংলাপে যোগ দিয়ে সিপিবির নতুন কোনো কথা বলার নেই। সে কারণে তাতে যোগদান করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছি না।অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সংবিধানসম্মতভাবে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা জরুরি। আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনি জাতীয় সংসদকে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে আগামী একমাসের ভেতরে ‘নির্বাচন কমিশন আইন’ প্রণয়ন করে তা স্বাক্ষরের জন্য পাঠাতে বলুন। তাহলে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে সে বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আপনার বৈঠকের প্রয়োজন পড়বে না।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে সংলাপে বসেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। এ পর্যন্ত মোট নয়টি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল ৩ জানুয়ারি সংলাপে যোগ দিবে গণতন্ত্রী পার্টি সন্ধ্যা ছয়টায়, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সন্ধ্যা সাতটায় এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। ৪ জানুয়ারি সংলাপ হবে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সন্ধ্যা সাতটায়। ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা হবে জাতীয় পার্টি-জেপি’র সাথে সংলাপ এবং সন্ধ্যা সাতটায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাথে। ৬ জানুয়ারি গণফ্রন্টের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি সাথে সন্ধ্যা সাতটায় সংলাপের কথা রয়েছে। এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে আলোচনা হবে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল’র সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায়। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি 'সার্চ কমিটি'র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।