রহমত ডেস্ক 28 December, 2021 03:58 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পথ চলতে চাই। সেই পথে চলতে গিয়ে যখন বাধাপ্রাপ্ত হব, তখন আর নিয়মের তোয়াক্কা করব না। আজ কর্মসূচি করার বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইছি, সেইদিন হয়তো অনুমতিও চাইতে নাও পারি। প্রশাসন যদি জনগণের মুখোমুখি হতে চায় সেই চ্যালেঞ্জ অব্যশই মোকাবেলা করতে হবে। কারণ, আমরা পাকিস্তানের সুদক্ষ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষ খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা চায়। এ দাবিটা দয়া বা মায়ার বিষয় নয়। এটা খালেদা জিয়ার নাগরিক অধিকার। আমরা খালেদা জিয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে সরকারকে বাধ্য করব।
আজ (২৮ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার স্থানীয় একটি হোটেলে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে নওগাঁয় সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
দলের অবস্থান তুলে ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, বিদেশে তার চিকিৎসা চাই। আমরা নির্দোলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, যে নির্বাচনে দেশের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। দেশের মালিক জনগন, আমরা জনগণের মালিকানা ফেরত চাই। কোনো ব্যক্তি দেশের মালিক নয়, অতএব ব্যাক্তির ইচ্ছায় অনুযায়ি দেশ চলতে পারে না। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ি দেশের বিভিন্ন জেলায় জনস্রোত নামিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করে আসছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথমে আজ মঙ্গলবার ২ টায় নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে সমাবেশ কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু একই সময়ে একই স্থানে জেলা যুবলীগও কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর জেলা বিএনপি শহরের এ-টিম মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানেও জেলা ছাত্রলীগ কর্মসূচি ঘোষণা দেয়। পরে নওগাঁ শহরে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এ সবের অর্থ কি, দেশবাসী সবাই বুঝে। দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষের বাকস্বাধীনতা বলতে কিছু নেই-তা আবারও প্রমাণ করল আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমরা চাইলে এই নওগাঁতে কর্মসূচি করতে পারি- সেই সক্ষমতা আমাদের আছে। কিন্তু আমরা শান্তিতে বিশাসী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। একটা কথা আছে- নিভে যাওয়ার আগে বাতি ধপ করে জ্বলে উঠে। এই সরকারেরও সেই অবস্থা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। আমাদের নেতা গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া ৯ বছর রাজপথে আপোসহীন সংগ্রাম করে স্বৈরাচার মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে এখনও তিনি আপোসহীন। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এই লড়াইয়েই দেশের জনগন বিজয়ী হবেই হবে। আমাদের নেতার দুটি কথা বলেছেন, কিছুদিন আগে বলেছেন, যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, তুমি যদি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ। সর্বশেষ বলেছেন, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে। সরকারের একজন পদত্যাগী প্রতিমন্ত্রীকে কানাডা গ্রহণ করেনি। কোথাও তার জায়গা হয়নি। সরকারকে বলব, যেহেতু পালাতেও পারবেন না, দেশেই থাকতে হবে তাহলে জনগনের সঙ্গে আপোস করেন। দেশের মানুষের অধিকার ফেরত দেন, ক্ষমতায় থাকেন বা নাই থাকেন শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করেন। দেশে অশান্তি সৃষ্টি করলে ফলাফল ভালো হবে না। আমাদের অবস্থা খারাপ হওয়ার কিছু নাই। গত ১২ বছর ধরেই তো খারাপ অবস্থায় আছি। মৃত্যুই যেখানে অবধারিত, সেখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।