| |
               

মূল পাতা জাতীয় ৯ দাবিতে সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন


৯ দাবিতে সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন


রহমত ডেস্ক     27 December, 2021     03:05 PM    


ঢাকা মহানগরী এলাকায় ৫ হাজার ও চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার জন্য অতিরিক্ত ৪ হাজার সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশার নিবন্ধন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আজ (২৭ ডিসেম্বর) সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১৭ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ও ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সিএনজি/পেট্রলচালিত ফোরস্ট্রোক থ্রি-হুইলার সার্ভিস নীতিমালা ২০০৭ এর অনুচ্ছেদ-ক (২) ধারার আওতায় ঢাকা মহানগরী এলাকায় ৫ হাজার ও চট্টগ্রাম মহানগরীর এলাকার জন্য অতিরিক্ত ৪ হাজার সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ঢাকার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়, ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী পেশাদার চালকরাই বরাদ্দ ও নিবন্ধন পাওয়ার অধিকারী হবে। কিন্তু প্রায় নয় বছরেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

এসময় বক্তারা ৯ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- ১. সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত মতে ঢাকা মহানগরীতে সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশার বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী পেশাদার চালকদের মধ্যে বরাদ্দকৃত ৫ হাজার ও চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার জন্য অতিরিক্ত ৪ হাজার সিএনজিচালিত থ্রি হুইলার অটোরিকশা নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে। ২. সিএনজি/পেট্রলচালিত ফোরস্ট্রোক থ্রি-হুইলার সার্ভিস নীতিমালা ২০০৭ এর বিধান লঙ্ঘন করে সিএনজিচালিত প্রাইভেট অটোরিকশা ‘ভাড়ায় যাত্রীপরিবহন’ এবং জেলার নিবন্ধন অটোরিকশা (কথিত গ্রামগাড়ি) মেট্রো এলাকায় অবৈধ চলাচল কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের সুবিধাভোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অসাধু সদস্য’ ও নামধারী শ্রমিক নেতাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশার সবগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ ও জনজীবনের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং, ‘চলন্ত বোমা’ সদৃশ এসব অটোরিকশা সড়ক থেকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

৩. ২০১৫ সালের পর সিএনজির মূল্য সরকার চার বার বৃদ্ধি করেছে। অথচ এই মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে যাত্রীভাড়া সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে ‘মিটার ক্যালিব্রেশন’ করা হয়নি। অপরদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে সিএনজি অটোরিকশাচালকদের জীবন-জীবিকা ভয়াবহ হুমকির মুখে। তাই, সিএনজি অটোরিকশার ভাড়ার হার মিটারে প্রথম ২ কিলোমিটারে ৮০ (আশি) টাকা, পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারে ৩০ (ত্রিশ) টাকা এবং ওয়েটিং-চার্জ প্রতি মিনিটে ৪ (চার) টাকা নির্ধারণপূর্বক গেজেট/প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। সিএনজি অটোরিকশার দরিদ্র চালকদের ক্ষেত্রে যেকোনো মামলার (ম্যানুয়ালি বা পস-মেশিনে) আর্থিক জরিমানার হার ৫০০ টাকার বেশি করা যাবে না। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য প্রণীত ‘সিএনজি/পেট্রলচালিত ফোরস্ট্রোক থ্রি-হুইলার সার্ভিস নীতিমালা, ২০০৭’ এর অনুচ্ছেদ-চ (৩) ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী স্ট্যান্ড বা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত অন্যায়ভাবে নো-পার্কিং মামলা দিয়ে চালকদের হয়রানি, নির্যাতন ও জরিমানা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নকালে পুনরায় হয়রানিমূলক ফিল্ডটেস্ট ও পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে এবং সহজ শর্ত বা পদ্ধতিতে নতুন লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে। এজন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম পঞ্চম শ্রেণি ও সমমান নির্ধারণ করতে হবে।

৫. সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ২৩ ও ৩৩ ধারা অনুযায়ী যেকোনো শ্রেণির মোটরযানের সংখ্যা বা সীমা (সিলিং) নির্ধারণপূর্বক রেজিস্ট্রেশন প্রদান করতে হবে। বিআরটিএর খেয়াল-খুশি মতো মোটরযানের অপরিকল্পিত ও আত্মঘাতী রেজিস্ট্রেশন দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বর্তমানে অনেকাংশে দায়ী মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া এখনই বন্ধ এবং চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বা সীমিত করতে হবে। পথচারী এবং সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট ও ধীরগতির যানবাহনের নিরাপদ বা ঝুঁকিমুক্ত চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক-মহাসড়কের দুইপাশে সার্ভিস রোড বা বাইলেন নির্মাণ করতে হবে। ৬. বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৫২ ধারা অনুযায়ী ‘আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিএনজি অটোরিকশাচালকের উত্তরাধিকারীকে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ এবং আহত চালকের চিকিৎসা খরচ ঝামেলা ও হয়রানিমুক্তভাবে দ্রুত পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। নিহত অথবা আহত চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স, এনআইডি/জন্মনিবন্ধন সনদ এবং নিজ নিজ ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য প্রত্যয়নপত্র বিবেচনায় নিয়ে আর্থিক সহায়তার টাকা মঞ্জুর ও হস্তান্তর করতে হবে। ৭. সিএনজি অটোরিকশা মালিকদেরকে নিজ নিজ অটোরিকশার চালকের ছবি সংযুক্তিসহ পূর্ণবিবরণ সংবলিত ‘প্রত্যয়নপত্র’ দিতে হবে।

৮. মোটরসাইকেলের বাণিজ্যিক ব্যবহার এবং অনুমোদিত গাড়ির চালকদের জন্য শেয়ারিং লেখা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ৯. মহানগরী এলাকার নিবন্ধিত সিএনজির জমা গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা বৃদ্ধি করতে করতে ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মালিক একদিকে গাড়ি স্বল্পতা এবং এর বিপরীতে তিনগুণেরও অধিক বেকার চালকেরা উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে জমা ১ হাজার ১০০ থেকে ৪০০ টাকা দিতে বাধ্য করছে। এছাড়া একবেলার গাড়ি দুইবেলা করে ভাড়া দিচ্ছে, যা ‘সিএনজি/পেট্রলচালিত ফোরস্ট্রোক থ্রি-হুইলার সার্ভিস নীতিমালা, ২০০৭’ এর চরম লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য মালিকদের এই অপরাধ বন্ধের জন্য বিআরটিএর পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকভাবে ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত আদালত পরিচালনা হবে। সিটি করপোরেশন-পৌরসভার সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টোলের আবরণে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।