রহমত ডেস্ক 24 December, 2021 07:41 PM
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে রাজধানী ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরো ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৯ জনে। এর আগে সকাল থেকে ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় লঞ্চে থাকা দুই শতাধিক যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। লঞ্চে আটকা পড়েছেন অনেকে। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে ঝাপ দিয়েছেন নদীতে। এতে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিখোঁজ প্রায় ১০০ জন।
আজ (২৪ ডিসেম্বর) শুক্রবার বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার ৮নং গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলের আশেপাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চটিতে সকল বয়সের প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন ।
লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া এলাকায় আসলে রাত ৩টার দিকে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লাগে। পরে লঞ্চটি সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় গিয়ে নদীর তীরে নোঙর করে। খবর পেয়ে ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দগ্ধ যাত্রীদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ঢাকা থেকে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। রাতে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লেগে দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর দগ্ধ হয়েছেন দুই শতাধিক যাত্রী। ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করেছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আমির হোসেন জানান, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়েছেন। সদর হাসপাতালে শতাধিক দগ্ধদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের বেশির ভাগেরই প্রায় ৩০ শতাংশ দগ্ধ। আশঙ্কাজনক দগ্ধদের বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আর বাকীদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, গতকাল রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠি সদরের ধানসিড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলে এমভি অভিযানের ইঞ্জিন রুমে আগুন লাগে। দ্রুত তা পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়লে প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই নদীতে ঝাপ দেন। লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। লঞ্চে শিশু, বুড়ো, নারীসহ ৫শ’র বেশি যাত্রী ছিলেন। খবর পাওয়ার পরপরই উদ্ধার কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা। তবে, কুয়াশার কারণে উদ্ধার কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। এদিকে আহত ৭০ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।