রহমত ডেস্ক 12 December, 2021 05:22 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন লগ্নে যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত দেশের ভিতরে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করবে। র্যাব একটি এলিট ফোর্স হিসেবে কাজ করছে, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে এই বাহিনী অত্যন্ত পেশাদারীত্বের পরিচয় দিয়ে কাজ করছে। এ বাহিনীর কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। নারায়ণগঞ্জর ঘটনায় এ বাহিনীর অন্তত সাত জন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছিলো। কোন অভিযোগ থাকলে বাহিনী নিজে কিংবা মন্ত্রণালয় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছে। আজ (১২ ডিসেম্বর) রবিবার সকালে সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুদক যে কোন তদন্ত কাজ চালিয়েযেতে স্বাধীন ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু ঢালাও ভাবে অভিযোগ এনে একটি বাহিনীর প্রধান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান অযৌক্তিক। মানবাধিকারের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্তই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সিটিতে রাস্তায় নামে,তাদের অন্যদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েকোন ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা নিশ্চিত এ সিদ্ধান্তের গভীরে বাংলাদেশ বিরোধী কিছু ব্যক্তি বা অপশক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে, আমরা তাদেরদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুগোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, যা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে , সেখানে দৃশ্যমান বর্ণবাদ বিরাজ করছে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছিলেন। কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য এবং নিপীড়ন প্রশ্নে খোদ জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে, মেক্সিকো-ইউএসএ সিমান্তে কতজন মারাগেছে? যেখানে বন্দুক হামলায় প্রতি বছর লাখো মানুষ মারা যায়, নির্বাচনে হেরে যেদেশের ক্যাপিটাল হিল দখল করতে গিয়ে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনা বিশ্ববাসী লক্ষ্য করেছে। বিশ্ববাসী দেখেছে মার্কিন গণতান্ত্রের স্বরূপ ও তাদের মানবাধিকারের চেহেরা।
তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সূচক সমুহে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে, খোদ এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিকে আমেরিকা সফরে বাধা দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুরকোনকোন খুনী এখনও আমেরিকায় লুকিয়ে আছে, যুদ্ধাপরাধীরাওসেদেশে পালিয়ে আছে, যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর অবলেবার রবার্ট রেইচ এক টুইট বার্তায় বিশ্বকে জানিয়েছিলেন শুধু ২০২০ সালে সেদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ৯৮৪টি। ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ৬ হাজার ৬০০ টি। প্রতিবছর সেখানে প্রায় ১ হাজার মানুষ বিনা বিচারে মারা যায়, যা বিভিন্ন তথ্যথেকে জানা যায়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহরপ্রেরণ করেছিলো, বাংলাদেশে খাদ্য সংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ মাঝপথথেকে ফিরিয়ে নিয়েছিলো আমেরিকা। ৭১'র গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭৫'র বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহৃ ঝুলে আছে,তবুও বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেইনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, দ্বিপাক্ষিক এবং অভিন্ন ইস্যুসহ বহুপাক্ষিক ইস্যুতে দুইদেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে।