মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ইসলাম মাতৃভূমির অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতি জোর তাকিদ দিয়েছে
ইসলাম ডেস্ক 10 December, 2021 04:39 PM
ঢাকার মিরপুরের বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী বলেছেন, ইসলাম দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতি জোর তাকিদ দিয়েছে। তাই মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব তার ভূখন্ড ও মাতৃভূমিকে অন্তকরনে ভালোবাসা। আর তার বিজয়, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখা। দেশ ও দশের কল্যাণে সদা সচেষ্ট থাকা। ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর জালিমের হাত থেকে মুক্ত হয় আমাদের দেশ। মাতৃভূমি, দেশের বিজয় আমাদের গৌরব। আমাদের অহংকার। আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন। আমরা তাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসি। আজ (১০ ডিসেম্বর) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বায়তুল মামুর জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, কারণ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সা. স্বীয় মাতৃভূমি মক্কা নগরীকে অনেক ভালোবাসতেন। হিজরতের সময় মাতৃভূমির ভালোবাসায় তাঁর চোখ মুবারক থেকে অশ্রু ঝরছিল। আর জবানে উচ্চারিত হচ্ছিল হে মক্কা! আমি তোমাকে ভালোবাসি। কাফেররা নির্যাতন করে যদি আমাকে বের করে না দিত, কখনো আমি তোমাকে ত্যাগ করতাম না। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৩য় খন্ড, ৪০৪ পৃষ্ঠা)। তিনি মদীনা নগরীকেও খুব ভালোবাসতেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, কোন সফর থেকে প্রত্যাবর্তনকালে মদীনার সীমান্তে উহুদ পাহাড় চোখে পড়লেই নবীজীর চেহারাতে আনন্দের আভা ফুটে উঠত। তিনি বলতেন, এই উহুদ পাহাড় আমাদেরকে ভালোবাসে। আমরাও উহুদ পাহাড়কে ভালোবাসি। (সহীহ বুখারী, ২য় খন্ড, ৫৩৯ পৃষ্ঠা )।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার বিজয় মহান আল্লাহর দান। তার অফুরন্ত এক নিয়ামত। এই নিয়ামত পেয়ে মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ঈমানী দায়িত্ব। তবে খুশিতে আত্মহারা হয়ে আল্লাহকে ভুলে গেলে চলবে না। আবার বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে আল্লাহর নিষিদ্ধ পথও অবলম্বন করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, যদি আল্লাহ দেয়া রাসুল সা. প্রদর্শিত পথ ও পদ্ধতি আচার অনুষ্ঠান ব্যতিত অন্য কোন পন্থা অবলম্বন, আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় তবে তা হবে অতিব দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়। যা গোটা জাতির অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে। আল্লাহ মা’ফ করেন। কোন জাতির ভাগ্যে যেন আল্লাহর ক্রোধ, আযাব ও গজব আর শান্তি নিপতিত না হয়।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, তোমরা যদি নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় কর তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে (নিয়ামত ) আরও বাড়িয়ে দিব, আর তোমরা যদি (গুনাহের মাধ্যমে ) তা অস্বীকার কর তাহলে আমার আজাব নিশ্চই কঠিন। (সূরা ইবরাহীম, আয়াত নং-৭)। অতএব আল্লাহর নির্দেশের বাইরে কোথাও কোন অগ্নি প্রজ্জলন, অশ্লীল গানবাজনা ও যাবতীয় গুনাহের কাজ পরিহার করত: আল্লাহর প্রশংসা ইস্তিগফার তাসবীহ তাহলীল পাঠ এবং বিজয়ের ঘটনায় যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদেরসহ সকলের জন্য কায়মনে দোয়া ও মাগফিরাত কামনা করাই এ দিবসে মু’মিনের কাজ। আল্লাহ বলেন, যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে এবং দলে দলে লোকদেরকে ইসলামে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন স্বীয় পরওয়ারদেগারের প্রশংসার সাথে তাসবীহ পড়ুন এবং আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করুন। (সুরা : নসর, আয়াত নং ১-৩)। আল্লাহ সকলকে তাওফিক দান করেন। আমিন।