রহমতটোয়েন্টিফোর প্রতিবেদক 06 October, 2021 01:39 PM
ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসারদের একটি পার্টিতে সহকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সমালোচনা আরও উস্কে দিয়েছে ওই নারীর ধর্ষণ শনাক্তে নিষিদ্ধ ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ করা হয়েছে।
বুধবার (৬ অক্টোবর) ভয়েস অব আমেরিকা, ওয়ান ইন্ডিয়া ও জি ২৪-এর খবরে জানানো হয়, ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসারদের একটি পার্টিতে এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন এক নারী। সেই নারীই এবার অভিযোগ তুলেছেন, অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত হতে তাকে ‘টু ফিঙ্গার টেস্টে’র মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে; যা দেশে নিষিদ্ধ।
নির্যাতনের শিকার নারী আরও অভিযোগ করেছেন, তাকে তার যৌন সম্পর্কের ইতিহাস নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রশিক্ষণ নিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কলেজে যাওয়া ওই নারী অফিসার অভিযোগ করেছিলেন, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে অফিসারদের মেসে পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। মাদকাসক্ত হয়ে ভোরে তার ওপরে চড়াও হন অভিযুক্ত। তখন পায়ে চোট থাকায় ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর তিনি আবিষ্কার করেন, তাকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে থানায় যান। ওই নারীর দাবি, বিমানবাহিনীতে দু’বার তাকে অভিযোগপত্র তুলে নিতে চাপ দিয়ে বাধ্য করা হয়। আরেকবার তাকে বয়ান বদল করা একটি চিঠিতে সই করতে বলা হয়, কিন্তু তিনি রাজি হননি। ২০ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী অফিসার। ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিতেশ হরমুখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নির্যাতিতার অভিযোগ, ধর্ষণ প্রমাণের জন্য ‘টু ফিঙ্গার টেস্টে’র কথা বলা হয় ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাসপাতালে। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেন বাহিনীর দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এতে সংবাদমাধ্যমে বিমানবাহিনীর বদনাম হবে বলে জানানো হয় তাকে। এর পরই মূলত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ওই নারী।
তবে ওই নারীর এই টু ফিঙ্গার টেস্টের অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরী। তিনি বলেন, কোনো টু ফিঙ্গার টেস্ট হয়নি। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা রক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ কী?
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, এই নামে চিকিৎসা বিজ্ঞানে কোনো পরীক্ষা নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে আদালত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশে এই পরীক্ষা করাতে হয়। দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর ফরেনসিক বিভাগে এই পরীক্ষা হয়।
মাহমুদ বলেন, হাতে গ্লাভস পড়ে নারীর একান্ত প্রত্যঙ্গে আঙুল প্রবেশ করিয়ে তার ‘টেন্ডারনেস’ পরীক্ষা করা হয়। এই টেস্টের নামই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা শতভাগ নির্ভুল নয়, এবং এ নিয়ে অনেক সময় কোনো উপসংহারেও পৌছানো সম্ভব হয় না।
/জেআর/