| |
               

মূল পাতা মুসলিম বিশ্ব মোল্লা বারাদারের পথ পরিক্রমা : করাচি থেকে দোহা


মোল্লা বারাদারের পথ পরিক্রমা : করাচি থেকে দোহা


রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক     18 August, 2021     05:28 PM    


আফগানিস্তান দখলের পর সবচেয়ে আলোচিত নাম মোল্লা বারাদার। তালেবানের শাসনামলে আফগানিস্তানের ভাবী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্বজুড়ে তাকে নিয়ে বিপুল আলোচনা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

আসুন, তার সম্পর্কে আরও জেনে নিই:

উগ্রবাদের অভিযোগে ৮ বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন এই মোল্লা বারাদার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

তখন এমন খবর বেরিয়েছিল যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মুক্তি চেয়েছিলেন, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ করার জন্য তালেবানের সঙ্গে মীমাংসায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ওই লক্ষ্যে ওই সংগঠনের একজন প্রভাবশালী নেতার খোঁজ করছিল।

এ খবর সত্য প্রমাণিত হয় যখন মুক্তি পাওয়ার কিছু দিন পরই বারাদার দোহায় গিয়ে তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের দায়িত্ব নেন।

যুক্তরাষ্ট্র আপস-মীমাংসার জন্য তালেবানের পক্ষে তাকেই কেন বেছে নিয়েছিল, তা খুব পরিষ্কার নয়। তবে ওই সময় নিউইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রে বারাদারের সাংগঠনিক দক্ষতা, স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব ও তালেবানের তৃণমূলে তার প্রভাব নিয়ে একটি রিপোর্ট ছাপা হয়।

ওই রিপোর্টে বলা হয়, ২০০৯ সালে বারাদার সাধারণ মানুষের মন জয় করার উপায় নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন, যেটা তৃণমূলে তালেবানের যোদ্ধাদের হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।

লন্ডনের দৈনিক সংবাদপত্র গার্ডিয়ানে তালেবানকে নিয়ে সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে সাংবাদিক জুলিয়ান বোর্গার লিখেছেন, পশ্চিমা কূটনীতিকরা দেখেছিলেন যে তালেবান শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বারাদারই পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কথা সবসময় শুনতে চাইতেন না এবং তিনি অতীতে কাবুলের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছেন।

২০১৯ সালে দোহায় গিয়ে তালেবানের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব নেন বারাদার। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে তালেবানের পক্ষে তিনিই সই করেন।

গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মোল্লা বারাদারকেই সারা বিশ্বের লোকজন দেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. ইউসুফজাই বলেন, ‘বারাদার তালেবানের এক নম্বর নেতা নন, কিন্তু বিশ্বের কাছে তিনিই এখন তালেবানের নেতা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন। তিনি ভালো ইংরেজি জানেন। বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিদেশ সফরে গিয়ে তাদের ভরসা দিচ্ছেন, স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভালো, চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করেছেন।’

পাকিস্তান তাকে এক সময় আটক করে কারাবন্দী করলেও ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সই করার আগে বারাদার ইসলামাবাদ গিয়ে পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আসেন, যা নিয়ে তখন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

সবমিলিয়ে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বারাদার শক্ত হাতেই আফগানিস্তান শাসন করবেন। নেতা হিসেবে অত্যন্ত যোগ্য এই ব্যক্তি পোড় খাওয়া, জুলম-নির্যাতনের শিকার হয়ে হয়ে নেতৃত্বগুণ অর্জন করেছেন এবং আজকের জায়গায় এসেছেন। সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান, রয়টার্স ও টোলো নিউজ।

/জেআর/