রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক 12 July, 2021 10:59 AM
দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে গেছে। নিমতলী, নিশ্চিন্তপুর হয়ে সর্বশেষ সেজান জুস কারখানা। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের মসজিদে আর মগবাজারে বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট আগুনেও প্রাণ গেছে বহু মানুষের। আগুন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একেক আগুন একেক প্রক্রিয়ায় নেভাতে হয়। এগুলো জেনে রাখা আমাদের সবার বিশেষ দায়িত্ব। রহমতটোয়েন্টিফোরের পাঠকদের জন্য এবারের বিশেষ আয়োজন। আসুন, জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ের আদ্যোপান্ত।
আগুনের বিভিন্ন ধরনকে ৫ ভাগে ভাগ করেছে দমকল বাহিনী। যেমন;
১-পুড়ে ছাই বা কয়লা হয়ে যায় এমন আগুন
২-তেলের আগুন
৩-গ্যাসের আগুন
৪-ধাতব পদার্থের আগুন
৫-ইলেকট্রিক আগুন
কীভাবে আগুন নেভাবেন
আগুন ধরলে প্রাথমিকভাবে বুঝতে হবে আগুনের ধরন কেমন, নেভানোর জন্য সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। যেকোন আগুন ধরতে দাহ্য-বস্তু বা জ্বালানি, অক্সিজেন এবং তাপ লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এই তিনটি উপকরণের যেকোন একটি সরিয়ে ফেললে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এক এক ধরনের আগুন নেভানোর জন্য এক এক ধরনের কৌশল নিতে হয়।
পুড়ে ছাই বা কয়লা হয় এমন আগুন:
এই আগুনের সূত্রপাত সাধারণত হয় চুলা থেকে। বাংলাদেশে কাঠ,কয়লা দিয়ে যেসব চুলা জ্বালানো হয় সেখান থেকে এই আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ধরনের আগুন নেভানোর জন্য পানি, শুকনো বালি এবং ভেজা বস্তা দিয়ে নেভাতে হবে।
তেলের আগুন:
কোন অগ্নিকাণ্ড যদি তেল থেকে হয় তাহলে সেটা নেভাতে ফোম ব্যবহার করা হয়। সব আগুন পানি দিয়ে নেভানো যায় না। ফায়ার সার্ভিস বলছে কেমিক্যাল মিশ্রিত ফোম এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী। তবে এটা সময়সাপেক্ষ। তাই ভেজা বস্তা বা কাঁথা দিয়ে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
গ্যাস থেকে আগুন:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসাবাড়িতে গ্যাস থেকে আগুন ধরলে প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে গ্যাসের লাইন বন্ধ করার জন্য। এর পর বস্তা বা পানি দিয়ে বারি দিতে হবে। এতে করে বাতাস বন্ধ হয়ে যাবে।
ধাতব পদার্থের আগুন:
ধাতব পদার্থের আগুন নেভাতে পানি দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে শুকনা বালি দিয়ে তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেহেতু আগুন ধরতে দাহ্য-বস্তু বা জ্বালানী, অক্সিজেন এবং তাপ লাগে - তাই ধাতব পদার্থের আগুন থেকে তাপ সরিয়ে ফেললে আগুন নেভানো সহজ হবে।
বৈদ্যুতিক গোলযোগের আগুন:
ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট বা গোলযোগ থেকে আগুন ধরলে কখনোই সেই আগুন নেভাতে পানি দেয়া যাবে না। এতে করে যে ব্যক্তি পানি দেবেন তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবেন। এখানে অনেকে ভুলভাবে পানি দেন। পানি দেয়া যাবে ছুঁড়ে বা কাটা কাটা ভাবে। যাতে করে আপনার সাথে পানির কোন ছোঁয়া না থাকে অর্থাৎ পানি থেকে আপনাকে বিযুক্ত থাকতে হবে। এই আগুন নেভানোর জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড দরকার হয়। এক্ষেত্রে এবিসিই ড্রাই পাউডার ব্যবহার করা হয়। আর ইলেকট্রিসিটির লাইনটা বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে আগে।
রাসায়নিক থেকে সৃষ্ট আগুন:
রাসায়নিক থেকে সৃষ্ট আগুন খুব সতর্কতার সঙ্গে নেভাতে হয়। ফায়ার সার্ভিস বলছে, রাসায়নিকের মধ্যে নানা রকমের উপাদান রয়েছে। তাই ফায়ার সার্ভিসকে ঘটনাস্থলে যেয়ে পর্যবেক্ষণ করে পদ্ধতি বের করতে হয়। প্রাথমিকভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এবং কুয়াশা আকারে পানি দিয়ে নেভানো যায়। তবে এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সাহায্য নিতে হবে।
(সূত্র : বিবিসি, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ফায়ার সার্ভিস)
/জেআর/