রহমতটোয়েন্টিফোর প্রতিবেদক 08 March, 2021 07:07 AM
দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর অন্যতম খলিফা মাওলানা মুমিন উল্লাহ। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সোমবার (৮ মার্চ) রাত ১২টায় তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে মেয়ের বাসায় ইন্তেকাল করেছেন। গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হযরতের খলিফা মাওলানা সাইদুর রহমান।
এর আগে, এক মাস পূর্বে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মাওলানা মুমিন উল্লাহর নাতিন জামাই মাওলানা মাসুম নযির জানিয়েছিলেন, হযরত দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। বার্ধক্য জনিত অসুস্থতায় আজ সাত আট মাস ধরে বিছানায়। হযরতের জন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছিলেন।
হযরত মাওলানা মুমিন উল্লাহ রহ. জন্মেছেন ১৯২১ সালের জানুয়ারি মাসে, নোয়াখালী জেলার মান্দারী মোহাম্মাদুল্লাহ পাটোয়ারী বাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার পিতা জনাব হাজী আব্দুল মজিদ ছিলেন এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুজুর্গ ব্যক্তি। হাজী আব্দুল মজিদ সাহেব হজের সফরে ইন্তেকাল করেন এবং তাকে জেদ্দায় দাফন করা হয়।
হযরত মাওলানা মুমিন উল্লাহ রহ. প্রাইমারি ও মক্তবের শিক্ষা নিজ এলাকাতেই সম্পন্ন করেন। পরে নোয়াখালী টুমচর সরকারী মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করার পর নোয়াখালী ইসলামিয়া আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন এবং সেখান থেকে জামাতে উলা সম্পন্ন করার পর ২২ বছর বয়সে উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্যে ভারতের দেওবন্দ মাদরাসায় যান।
ধর্মীয় শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস তিনি দারুল উলুম দেওবন্দেই সম্পন্ন করেন। সেখানে তিনি বিশ্ববরেণ্য আলেম হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী রহ. ও আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ.-এর নিকট বোখারী শরীফসহ অন্যান্য হাদিস গ্রন্থ অধ্যয়ন করেন।
দেশে ফিরে আসার পর তিনি বর্তমান চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত ওয়ারুক সরকারী মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে ক্রমাগত ছয় বছর শিক্ষকতা করার পর তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উজানী মাদরাসায় সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। পরে তিনি উজানীর পীর মাও. মোবারক করীম সাহেব রহ.-এর বোনের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন। এর কিছুদিন পরই তিনি মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর খেলাফত লাভ করেন।
পরে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদরাসা-মক্তব স্থাপনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ঢাকা মীরের বাগ, চৌমুহনীর বাটিয়া গ্রাম এবং চৌমুহনীর হাজীপুর, নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুর, কাপাসিয়া, লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সত্তরটির বেশি নুরানী মক্তব এবং কয়েকটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।
-জেড