| |
               

মূল পাতা জাতীয় পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের যুগপূর্তি আজ


পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের যুগপূর্তি আজ


রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক     25 February, 2021     11:17 AM    


পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের একযুগ হয়ে গেল আজ। ২০০৯ সালের আজকের এই দিনে (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিপথগামী বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানরা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য মাধ্যমের বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী রাইফেলস সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় বার্ষিক দরবার বসে পিলখানার দরবার হলে। সারাদেশ থেকে আসা বিডিআরের জওয়ান, জেসিও, এনসিওসহ বিপুলসংখ্যক সদস্যে তখন দরবার হল পরিপূর্ণ।

হলের মঞ্চে তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, উপমহাপরিচালক (ডিডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমএ বারী, বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাসহ বিডিআরের নানা পদের সদস্যরা। সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, ওইদিন দরবারে উপস্থিত ছিলেন ২ হাজার ৫৬০ জন।

দরবার শুরুর পর এক আনন্দঘন পরিবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ। মহাপরিচালকের বক্তব্য চলাকালে সকাল ৯টা ২৬ মিনিটে মঞ্চের বাম দিকের পেছন থেকে দুজন বিদ্রোহী জওয়ান অতর্কিত মঞ্চে প্রবেশ করে। ডিজির সামনে বন্দুকের নল তাক করে সিপাহি মঈন। আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে এ ঘাতক গুলি চালাতে না পারলেও অপর জওয়ানরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ।

আরও জানা যায়, দরবার হলের বাইরে থেকেও গুলির আওয়াজ ভেসে আসছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে লাল-সবুজ রঙের কাপড় দিয়ে নাক-মুখ বাঁধা বিদ্রোহী জওয়ানরা দরবার হল ঘিরে গুলি শুরু করে। তারা বৃষ্টির মতো গুলি করতে থাকে।

তারা অস্ত্রাগারটিও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্রোহী জওয়ানরা কর্মকর্তাদের দরবার হল থেকে সারিবদ্ধভাবে বের করে আনে। ডিজির নেতৃত্বে কর্মকর্তারা দরবার হলের বাইরে পা রাখামাত্র মুখে কাপড় ও মাথায় হলুদ রঙের হেলমেট পরা চারজন ডিজিকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করেন। ডিজির পর হত্যা করা হয় আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে। নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে বিপথগামী বিদ্রোহীরা। মুহূর্তের মধ্যেই দেশের অন্যান্য বিডিআর ব্যাটালিয়নেও ছড়িয়ে পড়ে সেই বিদ্রোহ।

এরপর বিদ্রোহী সৈনিকরা অস্ত্র নিয়ে পিলখানার ভিতরে টহল দিতে থাকে। সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ড্রেনে ফেলে দেয়। আশেপাশের এলাকা থেকে একাধিক সেনা কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের অনেক সদস্য কয়েক ঘণ্টা পর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পান।

এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া এখনও চলমান। উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডের পর ঢেলে সাজানো হয় বিজিবিকে। ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে বিডিআর- এর নাম পরিবর্তন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবি করা হয়। বদলানো হয় বাহিনীর পোশাক, ব্যাজ এবং পতাকা।
-জেড