শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি 29 December, 2020 11:13 AM
একটি সময় ছিল দেশের বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে অহরহ সাম্বার হরিণ দেখা যেত। তবে বর্তমানে এ জাতীয় হরিণের দেখা মেলা ভার। আর প্রাকৃতিক পরিবেশে তো দেখাই মেলে না।
সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা এই সাম্বার হরিণের দেখা মেলে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্ন অবস্থায় দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য দুটি সাম্বার হরিণ আনা হলেও বিগত দুই বছরে দুটি শাবকের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে পার্কে সাম্বার হরিণের সংখ্যা চারে পৌঁছলো। এর মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি মাদি।
পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক (ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার) সারোয়ার হোসেন খান বলেন,পার্কে সাম্বার হরিণ এখন দর্শনার্থীদের সাথে প্রতিনিয়ত লুকোচুরি করে। মাঝে মধ্যে ক্ষনিক সময়ের জন্য সে বের হয়ে এলেও দর্শনার্থীদের আগমনের শব্দে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। বিশেষ করে নতুন শাবকরা পার্কের গহীন অরণ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখে। তবে মাঝে মধ্যে বিপন্ন এই প্রাণীর দেখা পেলেই পুলকিত হয়ে ওঠেন দর্শনার্থীরা।
তিনি আরো বলেন, সাম্বার উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জাতের হরিণ। এদের বড় শিংয়ের কারণে বিশেষ মর্যাদা পায়। এদের গর্ভধারণের কাল ৭-৮মাস। প্রাপ্ত বয়স্ক হয় ৩ বছরে। এদের প্রজনন কাল নভেম্বর-ডিসেম্বরে। আর এরা প্রাকৃতিক পরিবেশে বেঁচে থাকে ২০-২৫বছর। এরা তৃণভোজী প্রাণী। ঘাস, পাতা বুনোফলই এদের প্রধান খাদ্য। এরা প্রধানত নিশাচর এবং ভোরে ঘন বনের দিকে চলে যায়।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সাম্বারের দেখা পেলেও বাংলাদেশে এ প্রাণীর দেখা পাওয়া যায় না। সাম্বারের দৃষ্টিশক্তি মাঝারি ও শ্রবণশক্তি তীক্ষ্ম। স্বভাবগতভাবেই এরা লাজুক এবং ঘন জঙ্গলে নিঃশব্দে চলে, সানন্দে পানিতে নামে ও শরীর ডুবিয়ে পানিতেও সাঁতার কাটে এরা। মার্চ থেকে এপ্রিলের দিকে বেশির ভাগ পুরুষ সাম্বারের শিং ঝড়ে পড়ে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন,সংকটাপন্ন এই সাম্বারের সফল প্রজনন হওয়ায় আশার সঞ্চার হয়েছে। অন্যান্য প্রাণীদের সাথে দর্শনার্থীদের অন্যতম বিনোদনের খোরাক তৈরি করে এই সাম্বার হরিণ।
তিনি আরো বলেন, করোনাকালে পার্ক বন্ধ থাকার মধ্যেও বেশ কিছু প্রাণীর জন্ম হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিধি মেনে পার্কে দর্শনার্থী আসছে।
-জেড