| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল আল্লাহর জমিনে একমাত্র আল্লাহর হুকুমই চলবে : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী


আল্লাহর জমিনে একমাত্র আল্লাহর হুকুমই চলবে : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী


রহমত নিউজ     11 October, 2024     07:47 PM    


বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেছেন, আমাদের মধ্যে কালেমার ঐক্য আছে। উলামায়ে কেরামের বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধতার উদাহরণ আছে। কিন্তু সারা পৃথিবী আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টি। আল্লাহ তা’আলার সৃষ্ট এই পৃথিবীতে একমাত্র আল্লাহ তা’আলারই বিধান চলবে এই বিষয়ে আমাদেরকে একমত হতে হবে। জমিন আল্লাহর। অতএব এই জমীনে হুকুমও চলবে আল্লাহ তা’আলার- এই স্লোগানই হোক আমাদের ঐক্যের ভিত্তি। 

তিনি হাদীসের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, সারা পৃথিবীর মুসলমান এক দেহের ন্যায়। এক দেহের ন্যায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সিন্ধু প্রদেশে মুসলিম এক মহিলার আর্তনাদে আরব থেকে মুহাম্মাদ বিন কাসিম তার বাহিনী নিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। উম্মাহর প্রতি দরদের এমন নজীর আমাদের রয়েছে।
 
বৃহস্পতিবার (১০ই অক্টোবর, ২০২৪) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীস্থ কাজলার পাড় হামিদ কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন যাত্রাবাড়ী থানা শাখা আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মরণে “সীরাতে নববী (সা.) এর আলোকে উম্মাহর ঐক্য : পথ ও পন্থা” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যাত্রাবাড়ী থানা আমীর মুফতী মাহফুজ মুসলেহ’র সভাপতিত্বে এবং মুফতী রুহুল আমীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজীবুর রহমান হামিদী, সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আতীকুর রহমান নান্নু মুন্সি, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মহানগর আমীর মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও নগর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মুফাসসির হুসাইন, বিভাগীয় সমন্বয়কারী ও গোপালগঞ্জ জেলা আমীর মুফতী শিহাবুদ্দীন কাসেমী, মুন্সিগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মাওলানা উবায়দুল্লাহ রাহমানী, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা আখতারুজ্জামান আশরাফী,  সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী আবুল হাসান কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মাওলানা জাফর আহমাদ, প্রচার সম্পাদক মুফতী জসিমুদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতী রুহুল আমীন, জাতীয় ইমাম পরিষদের আমীর মুফতী আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া, কাজলা মক্কী মাসজিদের খতীব মাওলানা ফয়জুল্লাহ, কাজলা সড়ক পাড় জামে মসজিদের খতীব মাওলানা ফখরুল হাসান মাসউদ, দারুল উলুম কুতুবখালির মুহতামিম মুফতী সাকিবুল ইসলাম, সায়্যিদুল উলুম এর পরিচালক মুফতী মাঞ্জুরুল ইসলাম কাসেমী, জামিয়া মাহমুদিয়া যাত্রাবাড়ীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতী ইমামুদ্দিন, সদ্য কারামুক্ত আলেমে দীন মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মুফতী ওমর ফারুক প্রমুখ।

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তার আহবানে সারাদেশে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ, গণজোয়ার তৈরি হয়। সবাই হাফেজ্জী হুজুরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হোন। কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান বলেছিল, পৃথিবীর আর কোথাও ইসলামী বিপ্লব হতে দেওয়া হবে না। এর কিছুদিন পরেই বিভিন্ন দল-উপদল তৈরি হওয়া শুরু হয়। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের রুপকার হাফেজ্জী হুজুর রহ. । তাঁর নীতি-আদর্শের আলোকেই আমাদেরকে এক ও নেক হয়ে আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী বলেন, কিছুদিন আগে এক মিছিলে তিনজন লোক কালেমাখচিত পতাকা মাথায় দিয়েছিল। কিন্তু তাদেরকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। হাজারো মানুষের সমাবেশ ছিল কিন্তু তাদেরকে মুক্ত করার জন্য কোন চেষ্টা করা হয়নি। দলের নেতা হলে এরকম মানসিকতার হওয়া চলবে না। ঐক্য করতে হলে উদার মনের অধিকারী হতে হবে।

মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচার পতনের পর জাতির যে প্রত্যাশা ছিল তা আজো পূরণ হয়নি। বৈষম্য এখনও শুধু রয়েই যায়নি বরং বেড়েই চলছে। সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন জাতির রাহবার উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী অঙ্গন। মসজিদের মিম্বর, হাদীসের মসনদ, রাজনীতির ময়দান থেকে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে।  আমাদের ঐক্যের পথে একটি বড় বাধা হল সোশ্যাল মিডিয়া। আমাদের জবানকে সংযত করতে হবে। নিজ নিজ মতাদর্শ, হীন স্বার্থকে পিছনে ফেলে রাসূলে কারীম (সা.) এর আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে মুফতী মাহফুজ মুসলেহ বলেন, আমাদের অন্তরে এই বিষয়টি স্থাপন করতে হবে যে, উম্মতে মুহাম্মাদী হিসেবে আমরা মূলত এক। আমরা বিভক্ত নই। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, নিশ্চয়ই এই উম্মত এক উম্মম আর আমি তোমাদের প্রতিপালক, সুতরাং তোমার আমার ইবাদত কর। অতএব দ্বীনি তাকাযা অনুযায়ী যদি আমার দলের বাইরে অন্য কেউ কোন কর্মসূচি দিলে সেখানেও আমাদের অংশগ্রহণ করা উচিত। দলের ইবাদত না করে সমস্ত কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে। 

আলোচনা সভা শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে শহীদদের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে দুআ করা হয়।