| |
               

মূল পাতা জাতীয় সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের জামানত দ্বিগুণ করে সংসদে বিল পাস


সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের জামানত দ্বিগুণ করে সংসদে বিল পাস


রহমত নিউজ ডেস্ক     14 September, 2023     12:02 PM    


সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় জামানত দ্বিগুণ করে জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত নারী আসন) নির্বাচন (সংশোধন) বিল -২০২৩ পাস হয়েছে। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বিলটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, সংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের আগের ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ২০ হাজার টাকা জামানত রাখতে হবে। খসড়া আইনে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী ইতোমধ্যে সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৫০ -এ উন্নীত করেছে। এখন এটি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও, সংশোধনীতে একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যদি কোনো কারণে জাতীয় সংসদে একটি সংরক্ষিত আসন খালি হয়ে যায় তবে ৯০ দিনের মধ্যে একটি উপনির্বাচন করতে হবে। আসন শূন্য হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনে উপনির্বাচন হয়।

বিলের ওপর আলোচনার সময় অভিযোগ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন,  সুশীল সমাজের সদস্য বলে দাবি করা কিছু লোক নিজেদের জনগণের অভিভাবক মনে করেন। তবে জনগণের সঙ্গে তাদের কতটা সম্পৃক্ততা রয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তারা বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়। তারা দেশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব বা পশ্চিম দিকে তাকায় না। তারা শুধু সুদূর পশ্চিম দিকে তাকায়। ওখান থেকে আসা কথাগুলো তারা এখানে প্রকাশ করার চেষ্টা করে।

এর আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলা ফরাজী দেশের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মতামত দেওয়ায় সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনা করেন। রুস্তম আলী ফরাজীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম। কারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে তা নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত সপ্তাহে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে দায়ের করা রিভিউ পিটিশনের ওপর শুনানি হয়েছে।হাইকোর্টের ছুটির পর আবার শুনানি হবে। এখন বিচারকদের পদত্যাগের কোনো বিধান নেই।’

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী বলেছেন, দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। তাই আমাদের প্রতিষ্ঠান আছে। আমরা টিএন সেশনের (ভারতের প্রাক্তন সিইসি) মতো একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন আশা করি। নির্বাচনের সময় সরকার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজ বারবার সংসদের অক্ষমতা ও সংসদের অকার্যকারিতা নিয়ে কথা বলছেন। এমন হলে নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই। ভারতের নির্বাচন নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তোলেনি। ‘তাহলে আজকের বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন আসবে কেন?  বাংলাদেশে নির্বাচন সঠিক পথেই চলছে। এটা ভালোভাবে হবে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবে, নিরাপত্তা পাবে। প্রধানমন্ত্রী এটা চান। দেশের মানুষ এটা চায়। বিশ্বও তাই চায়। এর বাইরে কিছুই হবে না। সবারই এটা মেনে নেওয়া উচিত। কেউ নির্বাচনে না জিতলে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা যাবে না।

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা অস্পষ্টতা, ভয় ও হতাশা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনেকেই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নির্বাচন কখন ও কীভাবে হবে সে বিষয়ে সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করছে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগের রাতে বেশিরভাগ জায়গায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল। জনমত এখানেও প্রতিফলিত হয়নি।

বিলের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন নিয়ে মানসিক সমস্যা রয়েছে। যারা নির্বাচিত হবেন তাদের কি কোনো নির্বাচনী এলাকা আছে? তারা এটা বোঝে না। তারা নিজেরাই এতে বিব্রত বোধ করেন। নির্বাচনে নারীদের বেশি মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব করেন, দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টের তিন বিচারপতিকে অনেক দিন ধরে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এই সমস্যাটি সমাধান করা দরকার। আর নারীদের আসন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান।