| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক উপমহাদেশ পুলিশের ‘আসল উদ্দেশ্য’ আমাকে অপহরণ ও হত্যা করা : ইমরান খান


পুলিশের ‘আসল উদ্দেশ্য’ আমাকে অপহরণ ও হত্যা করা : ইমরান খান


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     15 March, 2023     04:20 PM    


পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-পিটিআইর চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং দ্বিতীয় দিনের মতো ইমরানকে রক্ষায় তার বাসভবন ঘিরে রেখেছেন সমর্থকরা। এই পরিস্থিতিতে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনাকে ‘নিছক নাটক’ হিসেবে উল্লেখ করে ইমরান বলেছেন, পাকিস্তান পুলিশের ‘আসল উদ্দেশ্য’ তাকে অপহরণ ও হত্যা করা।

আজ (১৫ মার্চ) বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়ে বুধবারও লাহোরের রাস্তায় নাটকীয় অবস্থা বিরাজ করছে। আর এর মধ্যে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা ‘নিছক নাটক’, পাকিস্তান পুলিশের ‘আসল উদ্দেশ্য’ তাকে অপহরণ এবং হত্যা করা।

এনডিটিভি বলছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের এই নেতা বুধবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় গুরুতর এই অভিযোগ সামনে এনেছেন। আর ইমরানের পক্ষ থেকে এমন এক সময়ে এই অভিযোগ সামনে এলো যখন সমর্থকরা তার লাহোরের বাসভবন থেকে সাবেক এই ক্রিকেট তারকোকে গ্রেপ্তারে পুলিশের প্রচেষ্টাকে বাধা দিচ্ছে। অবশ্য পুলিশও ইমরানের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে এবং ইমরানের সমর্থকরা তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও জল কামান ব্যবহার করে সেটির জবাব দিয়েছে পুলিশ।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইমরান খানের সমর্থক এবং পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে আরও শক্তিশালী বাহিনীকে সেখানে ডাকা হয়েছে। ইমরান আজ তার টুইটে পুলিশের ছোড়া বুলেটের ছবি প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এগুলোই পুলিশের ‘খারাপ অভিপ্রায়ের’ বিষয়টি প্রমাণ করে।

Clearly "arrest" claim was mere drama because real intent is to abduct & assassinate. From tear gas & water cannons, they have now resorted to live firing. I signed a surety bond last evening, but the DIG refused to even entertain it. There is no doubt of their mala fide intent. pic.twitter.com/5LZtZE8Ies

— Imran Khan (@ImranKhanPTI) March 15, 2023

বুধবার সকালে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ইমরান বলেন, ‘তাকে গ্রেপ্তারের দাবি বা পরিকল্পনা ‘নিছক নাটক’, কারণ তাদের আসল উদ্দেশ্য হলো (আমাকে) অপহরণ এবং হত্যা করা। টিয়ার গ্যাস এবং জলকামানের পর পুলিশ এখন সরাসরি গুলি চালানোর পথ বেছে নিয়েছে। আমি গতকাল সন্ধ্যায় একটি জামিন বন্ডে স্বাক্ষর করেছি, কিন্তু ডিআইজি এটি নিতেও অস্বীকার করেছেন। তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রেঞ্জার্স সরাসরি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি হচ্ছে এবং পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের মুখোমুখি হচ্ছে, যখন ওই দলের নেতা ইতোমধ্যেই আদালতে অবৈধ ওয়ারেন্ট ও মামলার মুখোমুখি হয়েছে এবং যখন দুর্বৃত্তদের সরকার তাকে অপহরণ ও সম্ভবত হত্যা করার চেষ্টা করছে, তখন এটাই কি আপনাদের নিরপেক্ষতার নমুনা?

সংবাদমাধ্যম বলছে, ৭০ বছর বয়সী পাকিস্তানি এই রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। গত অক্টোবরে, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন তাকে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বেআইনিভাবে বিক্রি করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। পরে ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং গত সপ্তাহে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ক্রিকেট তারকা সমন এড়িয়ে যাওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

এদিকে ইমরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাহোরের পাশাপাশি ইসলামাবাদ, পেশোয়ার এবং করাচিতেও তার সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ইমরান বলেন, পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করতে এসেছে। তারা মনে করে ইমরান খান জেলে গেলে জনগণ ঘুমিয়ে যাবে। আপনাকে তাদের ভুল প্রমাণ করতে হবে, আপনাদের প্রমাণ করতে হবে- কওম (মানুষ) বেঁচে আছে। তোমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হবে, রাস্তায় নামতে হবে। আল্লাহ ইমরান খানকে সব দিয়েছেন। আমি তোমাদের হয়ে যুদ্ধে লড়ছি। আমি সারাজীবন লড়াই করেছি এবং চালিয়ে যাবো। কিন্তু আমার কিছু হলে - তারা আমাকে জেলে দেয় বা মেরে ফেলে - তোমাকে প্রমাণ করতে হবে যে তুমি ইমরান খানকে ছাড়াও লড়াই করতে পারো। তাকে গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ ‘লন্ডন পরিকল্পনার’ অংশ। এটি লন্ডন পরিকল্পনার অংশ এবং সেখানে ইমরানকে কারাগারে রাখা, পিটিআইয়ের পতন এবং নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা শেষ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। অবশ্য তার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন তারই উত্তরসূরি শেহবাজ শরিফ।