রহমত ডেস্ক 09 July, 2022 10:51 PM
ঈদুল আযহার ১৯৫তম জামাতের জন্য প্রস্তুত দেশের সর্ববৃহৎ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। ঈদ জামাতকে সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভা ইতোমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় থাকবে বিজিবি। আগামীকাল (১০ জুলাই) রবিবার সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় ঈদুল আজহার জামাতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন।
জানা গেছে, করোনার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসুল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে হবে। জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে প্রবেশেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য থাকছে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে দুটি ট্রেন। যা চলবে ভৈরব-ময়মনসিংহ রোডে। বড় ঈদগাহ, বড় জামাত, বেশি মুসুল্লির সঙ্গে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়-এমন আকর্ষণে ছুটে আসেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঈদুল আজহায় জায়াতকে ঘিরে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, বাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে মোবাইল নিয়ে প্রবেশেও থাকছে নিষেধাজ্ঞা। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করবে দুটি বিশেষ ট্রেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মাঠের রং করা থেকে শুরু করে মুসল্লিদের অজু ও গোসলের সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ জঙ্গি হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই বছর ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের সেই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখে’র অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।পরবর্তীতে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে, প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা কিশোরগঞ্জ কিশোরগঞ্জ সদর