সাংবাদিকরাও সার্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবে : তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাংবাদিকরা পেনশনের দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সার্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সমাজের সব মানুষ এই পেনশন সুবিধার আওতায় আসবে, সাংবাদিকরাও আসবে। সাংবাদিকরা এর আওতায় আসার ক্ষেত্রে প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের একটি দায়দায়িত্ব আছে এবং থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন একটি যুগান্তকারী ব্যবস্থার ঘোষণা যা ইউরোপীয় সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে রয়েছে, পত্রিকার পাতায় দেখলাম বিএনপি নেতারা সেটি নিয়েও সমালোচনা করছে। আসলে সবকিছু নিয়ে সমালোচনা করার বাতিক থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটিতে আপনাদের কোনো ‘সাজেশন’ থাকলে বলুন। সেই পরিকল্পনা যখন প্রকাশ করা হবে সেখানে কোনো ভালো ‘সাজেশন’ থাকলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এরকম একটি ভালো উদ্যোগের কেন সমালোচনা করছেন? সবকিছুতেই না বলার যে বাতিক, সেটাই তাদেরকে পেয়ে বসেছে, তা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। আশা করবো তারা এই না বলা রোগ থেকে মুক্তি পাক।

আজ (১ মার্চ) মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু’র পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, দ্যা ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিইউজে’র সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পারে, যে মানুষটি স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় তাকেও সাংবাদিকরা স্বপ্ন দেখাতে পারে। যারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন এবং হুমকির সম্মুখিন হয়েও সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত মানুষকে নিয়ে লেখেন, আমি তাদেরকে ‘স্যালুট’ জানাই কারণ এ ধরণের রিপোর্ট দরকার। এ ধরণের রিপোর্ট সমাজকে পথ দেখায় এবং দায়িত্বশীলদের আরো দায়িত্ববান হতে তাগাদা দেয়। গণমাধ্যমে আজকে যে অগ্রগতি সেটি এবং কোনো অসংগতি থাকতে সেটিও তুলে ধরুন। আমাদের সরকার সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে। সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, তথ্য কমিশন গঠিত হয়েছে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন সাংবাদিকবান্ধব নেতা ছিলেন। আজ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সকল সাংবাদিক সাহায্য পাচ্ছেন, অনুদান পাচ্ছেন, এক্ষেত্রে কে কোন দলের কে কোন মতের সেটি দেখা হচ্ছে না। যারা সরকারের সমালোচনা করেন তারাও সাহায্য পাচ্ছেন। করোনাকালে দেশের সকল অঞ্চলের সাংবাদিকরা সহায়তা পেয়েছে। সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েরাও যাতে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা পায় তার জন্য নীতিমালা হচ্ছে, সেই নীতিমালা খুব সহসা চূড়ান্ত হবে।

তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যম জগতে বিরাজমান কয়েক দশকের পুঞ্জিভূত বিশৃঙ্খলা দূর করে ধীরে ধীরে শৃঙ্খলা আনতে আমার চেষ্টায় অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাবল অপারেটররা টেলিভিশন মালিকের কাছে দাবি করতো যে, বেশি টাকা না দিলে সিরিয়াল যাবে পঞ্চাশে, টাকা দিলে সিরিয়াল যাবে পাঁচে। সেখানে সিরিয়াল ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এখন টেলিভিশন মালিকদের আর অপারেটরদের দ্বারস্থ হতে হয় না। বিদেশি মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন চলে যাওয়া বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকেই মনে করেছেন বিদেশি টিভি’র ক্লিনফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার কখনোই সম্ভব না, সেটি আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সংবাদপত্রে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনেকে বাস্তবায়ন করেছে আবার অনেকেই করে নাই। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন সোচ্চার আছে। আমি মনে করি যে, সবার নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত। আমরা এ নিয়ে কাজ করবো।