রহমত ডেস্ক 09 February, 2022 12:41 PM
ক্ষমতার মোহে বেসামাল ও বেপরোয়া হয়েই চিকিৎসক ও প্রকৌশলীদের নিয়ে দুই দফায় অশালীন বক্তব্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আত্মশুদ্ধির পথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পেশাজীবীদের সংগঠন প্রকৃচি (প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসক)। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি কৃষিবিদ ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূইয়া, মহাসচিব কৃষিবিদ মো. খায়রুল আলম (প্রিন্স), বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৯ জানুয়ারি ও পরবর্তীতে ৬ ফেব্রুয়ারি ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানে মির্জা আজম যে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য রেখেছেন তা আমাদেরকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। একজন রাজনীতিবিদ যখন বক্তব্য রাখতে গিয়ে কোনো কোনো শ্রেণি-পেশার সদস্যদেরকে আক্রমণ করে আপত্তিকর ও কল্পনা প্রসূত মন্তব্য করেন তখন এ দেশের সচেতন পেশাজীবী হিসেবে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। আমাদের মনে হচ্ছে মির্জা আজম সাহেব ক্ষমতার মোহে বেসামাল ও বেপরোয়া হয়ে এসব বক্তব্য রেখে নিজের ভুলত্রুটি অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সীমা লঙ্ঘনকারীকে মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না এবং আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধুর শিখিয়ে দেওয়া মন্ত্রে জনাব মির্জা আজম যেন আত্মসমালোচনা, আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির পথ বেছে নিয়ে নিজ এলাকার উন্নয়নে দৃষ্টি দেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অন্য পেশার সমুদয় পেশাজীবীদের চোর কিংবা বানরের সাথে তুলনা করে তার নিজের শিক্ষা কিংবা রুচিবোধের যে পরিচয় তিনি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এতে করে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, তিনি সরকার কিংবা মুক্তিযুদ্ধের পুরোধা রাজনৈতিক দলকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ লালনকারী পেশাজীবীদের মুখোমুখি অবস্থানে এনে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার ঘৃণ্য অপপ্রয়াসে লিপ্ত আছেন কি-না। এ দেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, কৃষি ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা আধুনিক উন্নত দেশ গঠন ও রোগমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসকদের অবদান সর্বজন স্বীকৃত। মির্জা আজম এরকম পেশাজীবীদের শুধুমাত্র অসম্মানই করেননি, তিনি তাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যদেরকেও অসম্মান করেছেন। কারো ঘরে স্টিকার লাগানোর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র সত্যি হলে তার নিজ গৃহে প্রথমে একটি স্টিকার লাগিয়ে অন্য ঘর খোঁজার চেষ্টা করাই উত্তম হবে বলে আমরা মনে করি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা শক্তি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে চোরের সমিতি বলা তার রাজনৈতিক অজ্ঞতার সামিল। আমরা তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজমের একটি বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি জামালপুর জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। ভিডিওতে মির্জা আজম বাংলাদেশের প্রকৌশলী ও চিকিৎসকদের ‘চোর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পরবর্তীতে আরেক অনুষ্ঠানে উজ্জীবিত পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে চোরের সমিতি বলেও উল্লেখ করেন।