| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসি গঠন আইন অসম্পূর্ণ : সংসদে মেনন


ইসি গঠন আইন অসম্পূর্ণ : সংসদে মেনন


রহমত ডেস্ক     26 January, 2022     09:45 PM    


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরীক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেছেন, সরকার দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন এনেছে, এ জন্য অভিনন্দন। তবে আইনটি অসম্পূর্ণ এবং এ কারণে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধু যে সাম্য ও সমতার অর্থনৈতিক নীতির কথা বারবার বলতেন ও সব সীমাবদ্ধতার পরও অনুসরণ করতেন, স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে আমরা তার যোজন যোজন দূরে পিছিয়ে গেছি। বাংলাদেশ এখন ধনীদের রাষ্ট্র, গরিবের নয়। খালি চোখেই দেখা যায় এই ধনিকদের এক ক্ষুদ্র অংশ উন্নয়নের সবকিছুতেই ভাগ বসাচ্ছে। আজ (১৯ জানুয়ারি) বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদে ষোড়শ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

মেনন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ-ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্য, অর্থ, পেশিশক্তি, বিশেষ করে প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও নির্বাচন কমিশনের নিশ্চেষ্ট ভূমিকা সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে আস্থা সম্পূর্ণ বিনষ্ট করেছে। নারায়ণগঞ্জের ব্যতিক্রমের নির্বাচন হয়েছে। দেশের মানুষ ব্যতিক্রমহীনভাবে এ ধরনের জাতীয় নির্বাচনই দেখতে চায়, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে। এই সরকারকে বহাল রেখেই সেটা করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা ও নির্বাচনী আইন, আচরণবিধি মানা ও অর্থ, পেশিশক্তি ও প্রশাসনের ভূমিকা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ। নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কেবল সবরই নয়, সরকার উৎখাতের স্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু এসব নিয়ে কথা বলার সময় তারা নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখে না। ২০০৬ সালে দেড় কোটি ভুয়া ভোটার ও নিজের লোককে প্রধান উপদেষ্টা করার জন্য যে ষড়যন্ত্র করেছিল তারই পরিণতিতে এদেশকে আরেকটি সেনা শাসন দেখতে হয়েছে। জানি না এবার বিএনপির লক্ষ্য কী? কী তাদের উদ্দেশ্য? তারা নিশ্চয়ই খোলসা করে বলছে না। কিন্তু কার্যাবলীতে স্পষ্ট তারা একটি অস্বাভাবিক সরকার এখানে চায়।

সংবিধান পর্যালোচনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ সংবিধানের পর্যালোচনা হওয়া প্রয়োজন। সংসদ নেতাকে অনুরোধ জানাই তিনি যেন সংসদের আগামী অধিবেশনে সংবিধান পর্যালোচনার জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করে দেন। যেখানে ধর্মীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে সব বিষয়ে আমরা নতুন করে ভাবতে পারব। বিভিন্ন সময়ে দেশের সংবিধানের মৌলিক চরিত্র বদল হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে যে সংবিধান দিয়েছিলেন তা সংসদীয় ব্যবস্থার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার আমলেই এই সংবিধানের মূল বিষয়গুলোর পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। আর সামরিক শাসকরা নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে এবং পাকিস্তানি রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে ওই সংবিধানকে ছুরি দিয়ে জবাই করেছিল। সংবিধানের দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানের মূল চরিত্র কিছুটা ফিরিয়ে আনলেও এমন সব বিধি বর্তমান যা সরকার পরিচালনায় প্রধান নির্বাহীর একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং সংবিধানকে ধর্মীয় রূপ দিয়েছে। বিএনপির দ্বাদশ সংশোধনের সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য মরহুম আবদুস সামাদ আজাদের নেতৃত্বে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তারা তা মানেনি। যার কারণে সম্প্রতি অলি আহমেদ ক্ষমা চেয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ের র‌্যাবের ৭ জন প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো উল্লসিত। এই বিষয়ে সরকারের মূল্যায়ন রাষ্ট্রপতির ভাষণে থাকলে ভালো হতো। কারণ এই বিষয়ে পররাষ্ট্র ও অন্যান্য মন্ত্রীদের বক্তব্যে মনে হয় আমরা যেন অপরাধী। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। যারা একাত্তরে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় পাকিস্তানিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি আটকাতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিল। তারা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলার অধিকার রাখে না। যে র‌্যাব সম্পর্কে বিএনপি বদনাম দিচ্ছে এটা তারাই সৃষ্টি করেছিল। র‌্যাব যাতে একটি নিপীড়ক বাহিনী না হয়ে ওঠে এ জন্য তখনই আমরা কথা বলেছি। আওয়ামী লীগও বলেছিল। এখনো যখন এ সরকারের সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা ঘটছে তখন জোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিসহ (নিজ দল) বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন তার প্রতিবাদ করেছে এবং এখনো করছে।