মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন মূলধারার সমমর্যাদা পাচ্ছে কওমি শিক্ষাব্যবস্থা
রহমত নিউজ 24 November, 2025 08:01 PM
দেশের সাধারণ, কারিগরি ও আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার মতোই কওমি শিক্ষাকে মূলধারার সমমান ও সমযোগ্যতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কওমি মাদরাসার সব স্তরের সনদ, পাঠক্রম ও দক্ষতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়ন করতেই নেওয়া হয়েছে এই গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় “বাংলাদেশ জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো নীতিমালা, ২০২৫”-এর একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছে। জনমত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ গত ১৬ নভেম্বর নীতিমালার খসড়াটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।
তবে প্রস্তাবিত নীতিমালার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, সাধারণ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষার মধ্যে যোগ্যতার সজ্ঞায়ন ও সমন্বয়, পূর্ব অর্জিত অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং আন্তর্জাতিকভাবে মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করতে হবে।
নীতিমালার সংজ্ঞায় বলা হয়, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষা দুটি প্রধান ধারায় বিভক্ত —১. আলিয়া সরকার স্বীকৃত ও সাধারণ বিষয়ের সমন্বিত এবং ২. কওমি মাদরাসা স্বতন্ত্র ও ধর্মীয় পাঠ্যক্রমভিত্তিক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) সামসুর রহমান খান বলেন, কওমি শিক্ষাব্যবস্থাকে দেশের মূলধারার শিক্ষায় পুরোপুরি অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। অতীতে কেবল দাওরায়ে হাদিসকে (মাস্টার্স সমমান) স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কার্যকর সংস্কারের জন্য এই প্রক্রিয়াটিকে উপর থেকে নিচের পরিবর্তে, নিচ থেকে উপরের দিকে কাঠামোগতভাবে সাজানো অপরিহার্য। সঠিক সংস্কারের মাধ্যমে কওমি শিক্ষাব্যবস্থার সনদগুলোকে দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্পূর্ণরূপে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। কারণ একটার পর একটা প্রজন্ম আসবে, দেশে বিদেশে তাদের (শিক্ষার্থীদের) কমপিট (প্রতিযোগিতা) করতে হবে না?
কওমি শিক্ষা স্তরের ধাপে ধাপে স্বীকৃতির কাঠামো বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাস্তবায়ন ম্যানুয়েল আমরা করছি। সেখানে কীভাবে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (গুণগত মান নিশ্চিত) হবে, কোন বিষয় কতটুকু পড়তে হবে, আমরা যেটা পড়াচ্ছি; বাইরে (দেশের বাইরে) কতটা রয়েছে সেটা ডিটেইল আমরা করবো। এটি একটি নীতিমালা করা হয়েছে, বাস্তবায়ন পর্যায় পরে হবে।
নীতিমালায় যে কমিটি রয়েছে তারা বাস্তবায়ন পর্যায়ে সুপারিশ করবে কি না জানতে চাইলে সামসুর রহমান খান বলেন, যারা এই নীতিমালা তৈরি করেছে, তারাও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করবে। এ ছাড়া প্রত্যেকটা বোর্ড নিজেদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করবে। তবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, যেই প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষই এই দায়িত্ব পালন করুক না কেন, একটি কমন ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে শিক্ষার গুণগত মান (Quality) যেন কঠোরভাবে বজায় থাকে। দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে তো মূল স্রোতের বাইরে রাখা যাবে না। মাদরাসা কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।