| |
               

মূল পাতা জাতীয় ক্ষমতা যত বড়ই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়: প্রধান ‍উপদেষ্টা


ক্ষমতা যত বড়ই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়: প্রধান ‍উপদেষ্টা


রহমত নিউজ     18 November, 2025     12:24 PM    


ক্ষমতা যত বড়ই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার প্রেক্ষিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ বাংলাদেশের আদালত এমন এক স্পষ্টতার সঙ্গে রায় দিয়েছেন যা জাতির ভেতরে ও বাইরে গভীরভাবে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। দণ্ডাদেশ ও সাজা একটি মৌলিক নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে: ক্ষমতা যত বড়ই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। এই রায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের জন্য—এবং যেসব পরিবার এখনও শোকের ভার বহন করছে—একটি আংশিক হলেও অত্যন্ত জরুরি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি যখন বছরের পর বছর চলা দমন-পীড়নে ধ্বংস হওয়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। যে অপরাধগুলো নিয়ে রায় দেওয়া হলো—তরুণ ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠ—তা আমাদের আইন যেমন লঙ্ঘন করেছে, তেমনি সরকার ও নাগরিকের মৌলিক সম্পর্ককেও ধ্বংস করেছে। এসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ—মর্যাদা, স্থিতিশীলতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি—গভীরভাবে পোড় খাইয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রায় ১,৪০০ জীবন হারিয়ে গেছে। তারা কেবল সংখ্যা ছিলেন না—তারা ছিলেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং নাগরিক, যাদের ছিল অধিকার। মাসের পর মাসের সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখিয়েছে যে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর, এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও, প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাদের কষ্টকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে আমাদের বিচার ব্যবস্থা অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী জবাবদিহিতার ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা পরিবর্তনের জন্য দাঁড়িয়েছিল—শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ—তারা এ কথাই বুঝেছিল, এবং অনেকেই তাদের জীবন দিয়ে এ মূল্য চুকিয়েছে—তাদের আজকে উৎসর্গ করে আমাদের আগামীকে সুরক্ষিত করেছে।

তিনি বলেন, আগামী পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহিতা নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মাঝে বিশ্বাস পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। মানুষ কেন প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য সব ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত হয়—তা বোঝা এবং সেই বিশ্বাসের যোগ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

শেষে তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, ন্যায়বিচার শুধু টিকে থাকবে না—এটি বিজয়ী হবে এবং স্থায়ী হবে।