সৌদির প্রতি আরো বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের জন্য সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সঙ্গে দুই বন্ধুপ্রতীম মুসলিম দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে বর্ধিত শক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান তেজগাঁও কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বলেন, এখনই সময় সৌদি আরব আমাদের সর্বোত্তম সমর্থন দিতে পারে। দুই দেশের সম্পর্ককে অন্যান্য দেশের তুলনায় ‘অনন্য’ ও ‘আলাদা’।

ড. ইউনূস সৌদি আরবকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে তারল্য সহায়তা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তহবিল জমা রাখতে সৌদি সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এটি হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি চমৎকার সহযোগিতার ইঙ্গিত। তিনি জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ছাড় সরবরাহ, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশি তরুণদের প্রশিক্ষণে সউদী বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে তেলসমৃদ্ধ দেশে আরও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠাতে পারে ঢাকা।

সৌদি আরবে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদানের কথা স্বীকার করে রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান বলেন, আরো দক্ষতা অর্জন তাদের আরও ভালো বেতন পেতে এবং দেশে আরও রেমিট্যান্স পাঠাতে সাহায্য করবে।
বর্তমানে প্রায় তিন মিলিয়ন বাংলাদেশি সৌদি আরবে কর্মরত। বছরে বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন তারা।

রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান বলেন, সৌদি আরব প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী ও মুসলিম হজযাত্রীকে ভিসা দেয়। ২০২৩ সালে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন বাংলাদেশি ওমরাহ হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি। তিনি আরো বলেন, তার দেশ বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং বন্দর ও লজিস্টিক খাতে বিশেষ করে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে এবং আকওয়া পাওয়ারের বিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রস্তাবিত সৌদি বিনিয়োগের সুবিধার্থে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সহায়তা চেয়েছে। তিনি তিনি জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়ে দুটি পবিত্র মসজিদের রক্ষক বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছ থেকে দুটি চিঠি হস্তান্তর করেন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার সরকার বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দেখতে চায় এবং ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত। এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে পবিত্র কোরআনের একটি অনুলিপি এবং সৌদি আরবের জাতীয় পাখি বাজপাখির প্রতিরূপ উপহার দেন।