রহমত নিউজ 06 October, 2024 10:07 AM
নিজেদের নেতৃবৃন্দের নামে থাকা সকল মামলা নির্বাহী আদেশে বাতিল চেয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ শেষে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে এমনটি বলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব শায়খ সাজেদুর রহমান।
এর আগে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করেন ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
সংলাপ শেষে হেফাজত মহাসচিব শায়খ সাজেদুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নিকট হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের নামে থাকা সকল মামলা নির্বাহী আদেশে বাতিল করার দাবি জানিয়েছি। এছাড়া বায়তুল মোকাররম এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত নেয়ার দাবি জানিয়েছি। সংলাপে শিক্ষা বিষয়ক যেকোনো কমিটিতেই আলেমদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হেফাজত মহাসচিব আরও ‘আমরা বলেছি যে, শিক্ষা কমিশন বাতিল করা হয়েছে, এখন আরও একটি শিক্ষা কমিশন গত ৩০ সেপ্টেম্বর গঠন করা হয়েছে প্রাথমিক ও উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়ে। সেক্ষেত্রে কিছু আপত্তির জায়গা রয়েছে। এই কমিশনে এমন ব্যক্তি রয়েছে, যারা বিগত রেজিম সরকারের হয়ে কাজ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার বিপক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন এমন ব্যক্তিও রয়েছেন। আমরা এই বিষয়গুলোতে আরও সতর্ক থাকার কথা বলেছি। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা যাতে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেটা বলেছি।’
‘এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্যর উর্ধ্বগতি নিয়ে কথা বলেছি। বাজারমূল্য যাতে নিয়ন্ত্রণে আসে সেই বিষয়ে কথা বলেছি,’ বলেন মহাসচিব।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর ও খেলাফত মজলিসেন মহাসচিব ডক্টর আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন সংস্কার কমিশনগুলো সংস্কার কাজ শেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে সংস্কারের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হবে। তারপর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।’
‘আমরা বলেছি, নির্বাচনের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করা যাবে না, আবার বেশি দেরিও করা যাবে না। যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই নির্বাচনে যাওয়াটা কল্যাণকর হবে,’ যোগ করেন তিনি।
এসময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, শিক্ষা কমিশনে স্বৈরাচারের দোসর, অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি রয়েছে। সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব শায়খ সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা আবদুল বাসেত আজাদ, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, ড আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ ও মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ইতোমধ্যে দুই দফায় উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সভা হয়েছে। সবশেষ গত ৩১ আগস্ট দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তারই চলমান প্রক্রিয়ায় তৃতীয় দফায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে এ দফায় আলোচনা শুরু হয়। এরপর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাথে আলোচনা হয়।