| |
               

মূল পাতা সারাদেশ রাজধানী ইসরাইলকে বয়কটের ডাক ওলামায়ে কেরামের: ৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ


ইসরাইলকে বয়কটের ডাক ওলামায়ে কেরামের: ৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ


রহমত নিউজ     23 December, 2023     10:16 PM    


জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে সর্বতোভাবে ইসরাইলকে বয়কটের ডাক ওলামায়ে কিরামের। ফিলিস্তিনে ইতিহাসের নিকৃষ্ট অপরাধ সংগঠিত করে চলেছে ইসরাইল। যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। তাই মত পথ নির্বিশেষে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের পক্ষে এবং দখলদার ইসরাইয়েলের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানানো সকলের ঈমানী ও মানবিক দাবি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ওলামায়ে কেরাম।

আজ ২৩ নভেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বকীয়তা রক্ষা ও দখলদার ইসরাইলী বর্বতার প্রতিবাদে মুসলিম উম্মাহর করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর  মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই, মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ, দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, দেশের বাহির থেকেও বিভিন্নভাবে যুক্ত হয়েছেন কয়েকজন সম্মানিত অতিথি। গুগল মিটে লাইভ বক্তব্য রাখেন ফিলিস্তিন ওলামা পরিষদ প্রধান ড. নওয়াফ তাকরুরি, অডিও বার্তা প্রেরণ করেন ভারত দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানী ও পাকিস্তান ওলামায়ে কিরামের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান। 
ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

পটিয়ার মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, শায়খ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ এর উপষ্টো মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক, জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরসার মুহতামিম মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদি, বনশ্রী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বরিশাল, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের  চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, শাহ আহমদ শফি রহ: এর সাহেবজাদা মাওলানা আনাস মাদানী, আফতাব নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ আলী কাসেমী, মুফতী লুৎফর রহমান ফরায়েজী, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা ড. বেলাল নূর আজীজি, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব্য ও ধর্মীয় আলোচক আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান, বাংলাশে খেলাফত মজলিস এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, বাহাদুরপুরের পীর মাওলানা হানযালাহ, ছাত্র নেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, যুব নেতা আতিকুর রহমান মুজাহিদ।

সেমিনার সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, মুফতী শামসুদ্দোহা আশ্রাফি, মাওলানা ইসমাইল সিরাজী আল-মাদানী, মফতি আবদুল আজিজ কাসেমী।

চরমোনাই পীর  বলেন, সরকার ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের পক্ষ নিয়েছে এটা ভালো দিক। ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষকে আর্থিক ও মুজাহিদ বাহিনী পাঠানোর ব্যবস্থাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেণ, ইঙ্গ-মার্কিনের সহযোগিতায় জারজরাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে ইতিহাসের জঘন্য বর্বরতা অব্যাহত রাখছে।

তিনি বলেন, মুসলিমবিশ^কে সম্মিলিতভাবে ইসরাইলকে রুখে দিতে হবে।  ইসলামশূণ্য নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে মেধাশূণ্য করার পায়ঁতারা করছে। দেশের অভিভাবকগণ এই কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছে। অভিভাবকগণ তাদের আদরের সন্তানদেরকে নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। এমতাবস্থায় দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা চেতনা অনুযায়ী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নের দাবি জানান। তিনি জাতিসত্তাবিরোধী শিক্ষাকারিকুলামের বিরুদ্ধে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশসহ বিশে^র প্রতিটি মুসলমান বায়তুল মুকাদ্দসকে হৃদয়ে ধারণ করেন। কাজেই মানবতার দুশমন ইসরাইল মুসলমানের হৃদয় থেকে মসজিদুল আকসার ভালবাসা মুছে দিতে পারবে না।

বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ইসরাইলের পণ্য সর্বত্রভাবে বর্জনের লক্ষে ক্যাম্পিং করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসরাইলের মুসলিম জাতিসত্তাবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড রুখে দিতে হবে।

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইল হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে দৃশ্যমান কোনো প্রতিবাদ করেনি। এখন দেরিতে হলেও তা শুরু হয়েছে। তবে এ আন্দোলন আরও জোরালো করতে হবে। আর মনের মধ্যে মসজিদুল আকসার প্রতি সবসময় টান অনুভব করতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি অফিসে মসজিদুল আকসার ছবি টানাব। এটা যখনই দেখব, তখন যাতে আকসার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। বাচ্চারা মসজিদুল আকসার সম্পর্কে জানতে পারে।

জাতীয় সেমিনারের ৭ দফা ঘোষণা পাঠ করা হয় : ১. মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসার হেফাজত এবং সন্ত্রাসী দখলদার ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের কবল থেকে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

২. মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনা এবং পবিত্র ভূমিসমূহ সুরক্ষার জন্য বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সমন্বয়ে সম্মিলিত সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৩.    আজকের সেমিনার বাংলাদেশের সর্বস্তরের ওলামা মাশায়েখ এবং বাংলাদেশের প্রিয় মানবতাবাদী গণমানুষের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের গাজ্জায় বর্বর ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং গাজ্জার হামাস সহ সকল প্রতিরোধ যোদ্ধার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছে।

৪. আজকের সেমিনার ইহুদীবাদী ইজরাইলের অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত হানতে সকল ইসরাইলি ও ইহুদী পণ্য বর্জন করার জন্য বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে দেশের সকল ওলামায়ে কেরাম এবং মসজিদের ইমাম খতিবগণকে মসজিদে মসজিদে মুসল্লীগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি বিকল্প দেশীয় পণ্য ব্যবহারে জনগণকে আহবান জানাচ্ছে।

৫. এই সেমিনার যেসব রাষ্ট্র অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে সামরিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা করছে; তাদের প্রতি নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করছে। বিশেষ করে মুসলিম রাষ্ট্রসমূহকে অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে যে কোন ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানাচ্ছে।

৬. ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার লড়াইয়ে শহীদ, আহত, বাস্তুহারা নিপীড়িত মজলুম মুসলিমদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

৭. মসজিদে আকসার সুরক্ষা এবং ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি দখলদার ইহুদিদের কবল থেকে পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব শুধু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের নয়; বরং এ দায়িত্ব গোটা বিশ্বের সকল মুসলমানদের।


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা ঢাকা