মূল পাতা আন্তর্জাতিক ‘সৌদি-রাশিয়ার সমঝোতায় অটল, তেলের উৎপাদন বাড়বে না’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 12 October, 2023 05:12 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেশি রাখতে সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল, তার মেয়াদ আরো বাড়বে। মধ্যপ্রাচ্যে হামাস ও ইসরায়েলের লড়াইয়ের মধ্যেও সৌদি আরব ও রাশিয়া ‘খুব সম্ভবত’ তেল উৎপাদন হ্রাসের ধারা চালিয়ে যাবে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন এ সংকটে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারে উঠে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়েছে। তেলের দাম বাড়লে রাশিয়ার সুবিধা, তারা সেখান থেকে অতিরিক্ত মুনাফা করতে পারবে। গত বছর ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর ইউরোপে রাশিয়ার তেল বিক্রি অনেকটা কমে যায়। এরপর তারা চীন, ভারতসহ বিভিন্ন বিকল্প বাজারে তেল বিক্রি শুরু করে। এখন তেলের দাম আবার বাড়লে পশ্চিমাদের উদ্বেগ আরো বাড়বে। কারণ, তারা এমনিতেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। মস্কোয় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মস্কোর চুক্তি তেলের বাজারের পূর্বাভাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং শেষ বিচারে মানবজাতির কল্যাণেও তার গুরুত্ব আছে।
গত সপ্তাহান্তে ফিলিস্তিনের হামাস বাহিনী হঠাৎ ইসরায়েলে হামলা চালালে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারের গতিবিধি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আলোচনায় বসেন রাশিয়া ও সৌদি আরবের কর্মকর্তারা। গতকালের বৈঠকে রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক ও সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান যোগ দেন। জ্বালানিবিষয়ক রাশিয়ার সম্মেলনের আগে তাঁরা এ বৈঠকে অংশ নেন। হামাসের হামলার পর চলতি সপ্তাহে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের মতো। হামলার কারণে বাজারে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। পণ্য বাণিজ্যের বৃহৎ কোম্পানি মারকুরিয়ার উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মজিদ সেনুদা সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আরেক বৈঠকে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়লে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারে উঠতে পারে। তিনি মনে করেন, স্বাভাবিক অবস্থায় তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারে ওঠার কথা নয়; কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে এখন যা ঘটছে, তাতে দাম সেই পর্যায়ে উঠে যেতে পারে।
এদিকে গত মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম ৯০ ডলার পেরিয়ে যাওয়ার পর আবার কিছুটা কমেছিল। তখনই বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারীরা ঘোষণা দিয়েছিল, সম্মিলিতভাবে তাদের তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বছরের শেষ ভাগ পর্যন্ত সৌদি আরব ও রাশিয়া বৈশ্বিক চাহিদার ১ শতাংশ বা দৈনিক ১৩ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াইরত পশ্চিমা নেতারা হতাশ হয়েছেন। ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘আমাদের কিছু সহযোদ্ধা, বিশেষ করে পশ্চিমা অভিজাতেরা তেলের বাজারসহ বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বিভ্রান্তির বীজ বুনেছেন। এ ধরনের রাজনৈতিক পদক্ষেপের নেতিবাচক প্রভাব পুরো বৈশ্বিক অর্থনীতিতেই অনুভূত হয়। এখন তা সংশোধন করতে হবে। অবশ্যই বলতে হয়, বাজারের দায়িত্বশীল অংশীজনদেরই তা করতে হবে।’