| |
               

মূল পাতা স্বাস্থ্য ডেঙ্গু চলতি বছরেই ডেঙ্গুতে ১১৯ শিশু-কিশোরের মৃত্যু


চলতি বছরেই ডেঙ্গুতে ১১৯ শিশু-কিশোরের মৃত্যু


স্বাস্থ্য ডেস্ক     04 September, 2023     12:16 PM    


সারাদেশেই ছড়িয়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। নবজাতক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ কেউই রেহাই পাচ্ছে না ডেঙ্গুর হাত থেকে। এ বছর ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছে ৬৩৪ জন। তন্মধ্যে ১১৯ জনই শিশু-কিশোর। যা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর ২৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম এবং ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম শাখার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে শূন্য থেকে ২০ বছর বয়সি ১১৯ শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মেয়ে শিশু ও কিশোরের মৃত্যু ছেলেদের তুলনায় বেশি, ৬২ জন। আর ছেলে শিশু-কিশোরের মৃত্যুর সংখ্যা ৫৭। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সিরা। এই বয়সসীমার ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মেয়ে ২০, ছেলে ২৪ জন। এছাড়া শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সি শিশুর মধ্যে মেয়ে শিশু ১৪, ছেলে শিশু ৯, ৬ থেকে ১০ বছর বয়সি মেয়ে শিশু ১৮, ছেলে ১৪, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সি মেয়ে শিশু ১০, ছেলে শিশু ১০। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও সিট সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ৩ দিন ধরে জ্বরে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিলেও অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর আদ দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭ বছর বয়সি কিশান দীক্ষিত। তার বাবা দুলক দীক্ষিত জাগো নিউজকে জানান, ছেলের ডেঙ্গু হয়েছে। প্রথমে অবস্থা ভালো থাকায় বাসায়ই ছিল। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সে, দুর্বল হয়ে পড়েছে, বমি করছে। পরে হাসপাতালে এনে ভর্তি করাই।

রাজধানীর শিশু হাসপাতাল ঘুরেও দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোতে ফাঁকা নেই কোনো সিট। নবজাতক থেকে ১৮ বছরের শিশুরা এখানে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে। তবে ডেঙ্গুর বিপজ্জনক চিহ্ন দেখেই ভর্তি নিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, সিট না থাকলে সোহরাওয়ার্দী কিংবা অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শিশু হাসপাতালের তথ্য অনু্যায়ী, ১৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ১০৫ জন শিশু। একই সময়ে ভর্তি হয়েছে ২১ জন। হাসপাতালটিতে এ পর্যন্ত ১৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু বিভাগের ইনচার্জ ডা. ফারহানা আহমেদ জানান, যাদের বিপজ্জনক লক্ষণ আছে সেসব ডেঙ্গু রোগীকেই ভর্তি করা হয়। তবে এবছর অন্যান্য বারের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী বেশি। যার কারণে দ্বিগুণ করতে হয়েছে হাসপাতালের বেড। যেসব শিশুর অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা রয়েছে, তাদের নিয়ে ঝুঁকিটা আরও বেশি।

ডেঙ্গু রোগের বিপজ্জনক লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানান, শিশুদের জ্বর আসলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর যখন বিপজ্জনক পরিস্থিতি যেমন যেমন পেটব্যথা, অনবরত বমি, শরীরে পানি জমা, নাক, মাড়ি থেকে রক্তপাত, অতিরিক্ত দুর্বলতা, অস্থিরতা, লিভার স্ফীতি দুই সেন্টমিটারের বেশি, ল্যাব পরীক্ষায় রক্তে হিমাটোক্রিটের মান বৃদ্ধি, অণুচক্রিকা দ্রুত কমতে থাকা। এ রকম কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের পাঁচ থেকে সাত দিন সময়কালে ‘মারাত্মক ডেঙ্গুর’ চিহ্নাদি দেখা দিতে পারে। যেমন ডেঙ্গু শক সিনড্রোম (যা ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়), শরীরে পানি জমা, নাড়ি দুর্বল, শীতল শরীর (তাপমাত্রা ৯৬.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কম), রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমা, অতিরিক্ত রক্তপাত, লিভার এএসটি বা এএলটির মান ১০০০ বা বেশি, অচৈতন্য অবস্থা, হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গে রোগের লক্ষণ প্রভৃতি।