| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক ভারতে শতকোটি ডলারের বিনিয়োগ বাতিল করতে চায় চীন


ভারতে শতকোটি ডলারের বিনিয়োগ বাতিল করতে চায় চীন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     30 July, 2023     01:57 PM    


ভারতে কারখানা করতে চেয়েছিল চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি বিওয়াইডি। কিন্তু তাদের প্রস্তাব নিয়ে নয়াদিল্লির নিরীক্ষার মুখে পড়ায় বিওয়াইডি ভারতীয় অংশীদারকে বলেছে, এই বিনিয়োগ প্রকল্প তারা বাতিল করতে চায়।  চলতি বছরের এপ্রিলে বিওয়াইডি ও ভারতের মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ১০০ কোটি ডলার ব্যয়ে এ কারখানা নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ভারতের তিনটি মন্ত্রণালয় প্রস্তাবের প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সেই সঙ্গে প্রকল্পের বিরোধিতাও করেছে তারা। এ পরিস্থিতিতে বিওয়াইডি গত সপ্তাহে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংকে বলেছে, তারা এ বিনিয়োগ প্রকল্প বাদ দিতে চায়। এ আলোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বিইওয়াডি বিষয়টি নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাববে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। আবার গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিওয়াইডি আনুষ্ঠানিক এ প্রস্তাব তুলেও নেয়নি। গত সপ্তাহে ইকোনমিক টাইমসের সূত্রে রয়টার্স জানায়, বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি বিওয়াইডি ভারতে কারখানা করতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের যে প্রস্তাব দিয়েছিল, দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার তা বাতিল করে দিয়েছে। তবে রয়টার্স তখন সেই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। এদিকে বিওয়াইডি এ বিনিয়োগ প্রস্তাবের হালচাল নিয়ে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এবং তারা এ প্রস্তাব তুলে নেবে কি না, সে বিষয়েও কিছু বলেনি। তবে রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিওয়াইডি বলেছে, তারা ১৬ বছর ধরে ভারতে আছে; তারা গাড়ি ও বৈদ্যুতিক বাস বিক্রি করছে ভারতের বাজারে।

এ বিষয়ে রয়টার্স ভারতের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ের কাছে ই-মেইল পাঠালেও তারা জবাব দেয়নি। মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংও এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি। রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহের এক বৈঠকে হায়দরাবাদভিত্তিক মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও পরিষ্কার হওয়ার জন্য বিওয়াইডিকে অপেক্ষা করতে বলেছে। বিওয়াইডি জানে, ভারত-চীনের সম্পর্কের যে রসায়ন, তাতে বিওয়াইডির বিনিয়োগ প্রকল্প নিরীক্ষার মুখে পড়বে এবং বিষয়টি রাজনৈতিক। তবে পরিস্থিতির যেন আরও অবনতি না হয়, সেই চেষ্টা তারা করছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এই গাড়িতে যে কণ্ঠভিত্তিক নির্দেশনা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে, তা ভারতীয় ভাষায় দেওয়া সম্ভব হবে এবং এই গাড়ি–সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ভারতে সংরক্ষণ করা হবে।

এদিকে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে ভারতের মোট গাড়ি বাজারের ৩০ শতাংশ হবে বৈদ্যুতিক। পরিবেশদূষণ রোধে দেশটি বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে ঝুঁকছে। বিওয়াইডির লক্ষ্য, ভারতের এই বিশাল বাজারে ৪০ শতাংশ হিস্যা নিশ্চিত করা। মূলত সে জন্যই তারা ভারতে কারখানা করতে চেয়েছিল। তবে বিওয়াইডির প্রস্তাব নিয়ে জটিলতা থাকলেও ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ভারত। বছরে পাঁচ লাখ গাড়ি উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন একটি কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে তারা। তবে এ কারখানায় যেসব গাড়ি উৎপাদিত হবে, তার ন্যূনতম দাম হবে ২০ লাখ রুপি। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার এখনো অনেক ছোট। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেশি দাম ও চার্জিং অবকাঠামোর অভাবে ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার অতটা বাড়ছে না, তবে ভারত সরকার এসব বাধা দূর করে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার দ্রুত সম্প্রসারণ করতে চায়। সে কারণে কোম্পানিগুলোও ভারতের বাজারে আসতে চাইছে।