| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি সহ ৩ দাবীতে কর্মসূচি ঘোষণা


মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি সহ ৩ দাবীতে কর্মসূচি ঘোষণা


রহমত নিউজ     20 July, 2023     05:52 PM    


নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, মাওলানা মামুনুল হক সহ কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবীতে ৪ আগষ্ট দেশব্যাপী মানববন্ধন, ২৬ আগষ্ট ঢাকায় আলোচনা সভা, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় জেলায় সমাবেশ, ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও ৭ অক্টোবর ঢাকায় গণ সমাবেশ এর কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন  বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস মাওলানা ইসমাঈল নুরপুরী। 

আজ (২০ জুলাই) বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টনস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা ইসমাঈল নুরপুরী বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে নানা উদ্বেগ উৎকন্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার অভিপ্রায়ে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ঢেলে সাজাচ্ছে। একান্ত অনুগতদের দিয়ে নতুন করে জেলা প্রশাসক নিয়োগ সহ প্রশাসনে নানা পরিবর্তন পরিবর্ধন করে যাচ্ছে। মূলত এ সংকটের শুরু আওয়ামী লীগের একক ইচ্ছায় ষোড়শ সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের মাধ্যমে। এটাকে তারা ক্ষমতা ধরে রাখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ইচ্ছামত সংবিধান কাটছাট করে এখন সংবিধানের দোহায় দিয়ে জাতিকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বিগত নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। দিনের ভোট রাতে করে ২০১৮ সালের নির্বাচনে সরকার আস্থার সর্বশেষ জায়গাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। এমতাবস্থায় প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা করেছে। তাই আমাদের দাবী নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

সরকারের নির্বাচন কেন্দ্রীক একঘুয়েমির ফলে আন্তর্জাতিক শক্তি সমূহ ইতোমধ্যে তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার লোভে সরকার চীন ও রাশিয়া ব্লককে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে মূলত বাংলাদেশকে একটি কুটনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যাহা একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতির জন্যে লজ্জাস্কর ও অপমান জনক বটে।

তিনি আরও বলেন, বিরোধী মত দমনের ধারাবহিক নীতির অংশ হিসেবে সরকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ইচ্ছামত গ্রেফতার, হয়রানি ও ষড়যন্ত্র মূলক মামলা দিয়ে আটক রেখেছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের কিংবদন্তি শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. সন্তান মাওলানা মামুনুল হক সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। মিথ্যা মামলার মাধ্যমে দীর্ঘ দুই বছরের অধীক সময় তাকে আটক করে রেখেছে। সরকারী হস্তক্ষেপে মাওলানা মামুনুল হক আইনগত মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। একই মামলায় অন্যান্যরা জামিন পেলেও উচ্চ আদালতে মাওলানা মামুনুল হকের জামিন আটকিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা আইনের শাসনের প্রতি সরকারের অন্যায় হস্তক্ষেপ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ও দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক সহ কারাবন্দী আলেম উলামাদের নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।

তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রর্বমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। আয় না বাড়লেও নিত্যপণ্যের এমন উর্ধ্বমুখীভাবে জাতি দিশেহারা। সরকার ব্যবসায়িদের খুশি রাখতে মজুতদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো আমদানি বন্ধ রেখে তাদেরকে মানুষের রক্ত চোষার সুযোগ করে দিচ্ছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে তারা দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে এগারো শত টাকা কেজিতে কাচা মরিছের মূল্য সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। নানা অজুহাতে কখনো ডাল, কখনো চাল, কখনো চিনি, কখনো আটা, কখনো তেল মার্কেট আউট করে কৃত্রিম সংকট তৈরী করা এ সেন্ডিকেট একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাই অবিলম্বে দ্রর্বমূল্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে জোর দাবী জানান।

তিনি বিদেশীদের ভয়ে নয় দেশপ্রেম ও রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তিতে গণ-মানুষের দাবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ও প্রতিহিংসা নয় ও আইনের শাসন কায়েমের স্বার্থে মাওলানা মামুনুল হক সহ বন্দি আলেম ওলামাদের দ্রুত মুক্তি এবং মজুতদারী সিন্ডিকেটদের সাথে আপস না করে দ্রম্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় সরকারের ব্যর্থতায় জাতি দলমত নির্বিশেষে অপশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে বাধ্য হবে।

পুরানা পল্টনস্থ দারুল খিলাফাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য  মাওলানা আব্দুস সোবহান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতি নূর মোহাম্মদ আজিজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় অফিস ও বায়তুলমাল সম্পাদক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রমুখ।