রহমত নিউজ ডেস্ক 26 June, 2023 07:26 PM
জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমানের সাক্ষ্যের বরাত দিয়ে মাওলানা মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন দাবি করেছেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণার বিয়ে হয়েছিল। সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরাবরই মিডিয়াতে সাক্ষ্য প্রসঙ্গে মিথ্যাচার করে আসছেন।
সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নতুন কোর্ট এলাকায় জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমানের দেয়া সাক্ষ্যের সার্টিফাই কপি দেখিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ব কথা বলেন।
আইনজীবী নয়ন বলেন, গত ৬ জুন আদালতে জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘আমার মা জান্নাত আরা ঝর্ণা ও মাওলানা মামুনুল হকের বিয়ে বৈধ। তারা দুজন স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে বিয়ে করেছেন।’ কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলাটি নিয়ে বরাবরই মিথ্যাচার করে আসছে।
ওইদিন মিডিয়াতে নারী ও শিশু আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বলেছেন, ‘দুইজন সাক্ষী বলেছেন মাওলানা মামুনুল হক ঝর্ণাকে এখানে এনে ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান কখনো বলেননি আমার মাকে ধর্ষণ করেছেন মামুনুল হক।’
আইনজীবী নয়ন বলেন, ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর মামলার বাদী যেদিন সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মিডিয়ায় বলেছিলেন, ঝর্ণাকে নাকি আমরা ৪১ বার ধর্ষণ করেছে কিনা জিজ্ঞাসা করেছি। আর এই ৪১ বারই নাকি ঝর্ণা হ্যাঁ উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এদিন মাত্র দুই থেকে তিনবার এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। এভাবে শুরু থেকেই রাষ্ট্রপক্ষ মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। গত ৬ জুন ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান আদালতের কাছে তার নিরাপত্তা চেয়েছেন। কিন্তু আদালত থেকে বের হওয়ার পর তাকে ডিবির লোকজন নিয়ে যায়। আব্দুর রহমান সেদিন বলেছেন তাকে খুলনা থেকে পুলিশ তুলে এনে ঢাকার ফারস হোটেলে রেখেছেন। যেখানে তার মা জান্নাত আরা ঝর্ণা ও তার নানাকে আনা হয়েছিলো। সরকারি টাকায় তাদের সব খরচ বহন করা হয়েছে। এসকল কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হয় জান্নাত আর ঝর্ণা মাওলানা মামুনুল হকের বৈধ স্ত্রী। আশা করি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।
নিজের জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে উল্লেখ করে নয়ন বলেন, এই মামলার আইনজীবী হিসেবে আমি নিজেকে নিরাপত্তাহীন ও ঝুঁকিতে আছি বলে আমার মতামত প্রকাশ করছি। কারণ এর আগেও নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার সময় আমাদের একজন আইনজীবীকে র্যাব সদস্যরা হত্যা করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রকিব উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, মামুনুল হকের আইনজীবী এসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন। তার এসকল বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
এদিকে সার্টিফাই কপিতে দেখা যায়, সেখানে মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুল রহমান বলেছেন, ‘২০১৮ সারে আমার বাবা-মার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। তারপর আমার মা ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় আসার পর আসামি মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে আমার মায়ের সম্পর্ক হয়। আমি যতটুকু জানি তাদের বিয়ে হয়। তাদের মধ্যে সম্পর্ক চলতে থাকে। আসামিকে পূর্ব থেকেই চিনতাম। আমার বাবার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। আসামি কুপরামর্শ দিয়ে আমার মাকে দিয়ে আমার বাবাকে তালাক দেওয়ায় এটা সত্য নয়।’
এর আগে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একইসঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা নারায়ণগঞ্জ নারায়নগঞ্জ সদর