রহমত নিউজ ডেস্ক 14 June, 2023 08:28 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে কীসের উন্নয়ন। জনগণের টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন হয়েছে। সরকার আপনাদের এখানে একটা টানেল করছে। যেটি নিয়ে তারা ঢোল পেটাচ্ছে। আমাদের টানেল দরকার আছে, তবে তার আগে আমাদের বাঁচার দরকার আছে। ছেলে-মেয়েদের চাকরির দরকার আছে। স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তার দরকার আছে। আজকে নতুন করে কলকারখানা তৈরি হচ্ছে না। ৪২ ভাগ পোশাক কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে। আজকে ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে পারছেন না। কারণ ডলার নেই। নেই কেন? সরকারি লোক সব পাচার করে দিয়েছে। তারা ব্যাংক লুট করেছে।
বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউরি মোড়ে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির জাতীয় ও চট্টগ্রামের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুরে কাজির দেউরি মোড়ে সমাবেশ শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দিতে থাকে। এদিন সমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে নগরের চকবাজার থানা এলাকায় বিএনপির একটি মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগ। এসময় কিছুক্ষণ ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জানা গেছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে তরুণদেরও শামিল করতে চট্টগ্রামে এই সমাবেশ করে বিএনপি। চট্টগ্রামের পর পর্যায়ক্রমে ১৭ জুন বগুড়ায়, ৭ জুলাই খুলনায়, ১৫ জুলাই বরিশালে, ২২ জুলাই সিলেটে এবং সর্বশেষ ২৯শে জুলাই ঢাকায় এই তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ১৪ বছর হয়েছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছেন। এর মধ্যে তারা আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। কোর্টে কোনো বিচার হয় না। মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়। হাইকোর্টে আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আবার কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। আবার যখন আমরা কারাগারে থেকে হাইকোর্টে জামিন নিয়ে বের হই, তখন নতুন মামলার গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আমরা চেয়েছিলাম একটি গণতান্ত্রিক দেশ। যেখানে আমাদের ভোট আমরা দেবো, যাকে খুশি তাকে দেব। আমরা কথা বলতে পারব। সরকারের সমালোচনা করতে পারব এবং লিখতে পারব। কিন্তু আজকে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। আজকে দেশের কোথাও কোনো শান্তি নাই। প্রতি পদে পদে গলা টিপে ধরা হয়েছে। এখন সাংবাদিক ভাইয়েরা লিখতে পারেন না। কারণ, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন লিখলেই সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হবে। অনেকে কারাগারে গিয়েছেন। সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন শহরে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীরের মায়ের কাছে হেরেছে। বরিশালে প্রায় চরমোনাই পীরের কাছে হেরেই যাচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে কারসাজি করে জিতে গেছে। তারা চরমোনাইয়ের পীরকে পর্যন্ত মারতে দ্বিধাবোধ করেন নাই। আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে আমরা বারবার মুক্ত করে দিতে বলেছি। আমরা জানি না, কারাগারে থাকার সময় তাকে সেখানে স্লো-পয়জনিং করা হয়েছিল কি না। কারণ তিনি যেভাবে অসুস্থ হয়েছেন সেটি হওয়ার কথা নয়। তিনি এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। আজকে চল্লিশ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে? এটি কোন গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না।