রহমত নিউজ 08 June, 2023 10:03 PM
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতাব্দীকাল পেরিয়ে গেলেও আমরা একটি সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য, পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত শক্তিশালী নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। ফলে বারবার জনগণের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। ৮১ ও ৮৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট কারচুপির মাধ্যমে হাফেজ্জী হুজুরকে বাহ্যিকভাবে পরাজিত করা হয়েছে। ৯৬ এর ফেব্রুয়ারিতে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিনাভোট ও রাতের ভোটের নির্বাচনে জনগণের মতামত ও ভোটাধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে। ফলে কোন ধরনের জবাবদিহিতা ছাড়াই একের পর এক নিবর্তনমূলক আইন, করের বোঝা জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দ্রব্যমূল্যে চাপে জনগণ আজ দিশেহারা। দেশকে বাঁচাতে, দেশের জনগণকে বাঁচাতে, স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশে^র দরবারে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার স্বার্থে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের মাধ্যমে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তোলে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। বিদেশীদের চাপে নয় বরং দেশের জনগণের দিকে তাকিয়ে, তাদের ভোটাধিকারকে সম্মান দেখিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকাল ৩টায় রাজধানীর শনিরআখড়াস্থ লাকী কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন কদমতলী থানার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খেলাফত আন্দোলন কদমতলী থানা আহবায়ক হাফেজ ক্বারী রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন, দলের নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, সহকারী মহাসচিব আলহাজ আতিকুর রহমান নান্ন মুন্সী, মাওলানা ফিরোজ মোল্লা আশরাফী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক মোফাচ্ছির হোসাইন, আইন ও বিচার সম্পাদক মুফতী মাহফুজুর রহমান, প্রিন্সিপাল শফিকুল ইসলাম, আব্দুর রব, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম মজুমদার, মুফতী শাহাদাত হোসাইন, মাওলানা রফিউদ্দীন, মাওলানা মো: ইউসূফ, মুফতী আবু বকর সিদ্দীক, মুফতী মো: আদনান, রাশেদ উন নবী প্রমূখ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, দেশের রাজনৈতিক আকাশে আজ শকুনের উড়াউড়ি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জনমতকে বিন্দুমাত্র সম্মান না দেখানোর কারণে বিদেশিরা আজ প্রভু সেজে দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপের সাহস দেখাতে পারছে। প্রধান রাজনৈতিকগুলো এর দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় কারা আসবে, কারা থাকবে তা এদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। এজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। তিনি বর্তমান বাজেটে জনগণের উপর অযাচিত করের বোঝা কমানো, দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা, লোডশেডিং কমানো, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনা, ঢাকা শহরের অসহনীয় যানজট কমানোসহ চলমান জনদূর্ভোগ কমানোর জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, দূর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, ছিনতাই, ধর্ষণের কবল থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হলে খেলাফত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হাফেজ্জী হুজুরের রাজনৈতিক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সমাজের সকল স্তরে উলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সম্মেলনে মাওলানা সাইফুল ইসলামকে আমীর এবং হাফেজ ক্বারী রেজাউল করীমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ঠ কদমতলী থানা কমিটি ঘোষণা করা হয়।