| |
               

মূল পাতা জাতীয় নিরাপদ সড়ক গড়তে পৃথক আইনি কাঠামো তৈরিসহ ৩ দফা দাবি


নিরাপদ সড়ক গড়তে পৃথক আইনি কাঠামো তৈরিসহ ৩ দফা দাবি


রহমত নিউজ ডেস্ক     15 May, 2023     10:07 PM    


সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও নিরাপদ সড়ক গড়তে পৃথক আইনি কাঠামো তৈরিসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে ‘রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ’। 

দাবিগুলো হলো- ১. সড়কে মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে পৃথক আইনি কাঠামো তৈরি করা। যেখানে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক তৈরি, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী ও দুর্ঘটনা পরবর্তী চিকিৎসাকে বিবেচনায় নিয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে। ২.ন্যাশনাল রোড সেইফটি অথোরিটি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন। ৩. সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ে সঠিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের একটি বৈজ্ঞানিক ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ।

আজ (১৫ মে) সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা ১০টি সংগঠনের জোট রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ৭ম জাতিসংঘ বৈশ্বিক নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ- ২০২৩’ পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোড সেইফটির প্রকল্প পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঞা, বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এস বজলুর রহমান, সিআইপিআরবির আরটিআই প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ ইউনিটের রোড সেইফটি প্রকল্প ম্যানেজার কাজী বোরহান উদ্দিন, নিসচার মহাসচিব লিটন এরশাদ, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হক কামাল প্রমুখ।

রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে সংগঠনটির সদস্য সংস্থা ‘নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচা’র চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, রোড ক্রাশের ফলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে চাপ বাড়ছে এবং অর্থনীতিতে (জিডিপি) বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি পারিবারিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেকে। দেশে সফলভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু হার কমিয়ে আনা গেলেও সড়কে প্রতিনিয়ত মৃত্যু ঘটছে, আহত হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু এটি প্রতিরোধযোগ্য। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা জরুরি, নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘের ‘সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেইফটি ২০২১-৩০’ স্বীকৃত নিরাপদ সড়কের জন্য বিবেচিত পাঁচটি অন্যতম স্তম্ভকে (নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক তৈরি, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী ও দুর্ঘটনা পরবর্তী চিকিৎসা) বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ সড়কের জন্য দ্রুত একটি আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, যেসব দেশ সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে, তারা সেইফটি সিস্টেম অ্যাপ্রোচ বা একটি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলার ধারণাটি নিজেদের আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে তারা সড়কে মানুষের মৃত্যু ও মারাত্মক আহত হওয়ার সংখ্যা অনেক কমিয়ে এনেছে। রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য এ সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা নিয়ে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে পরামর্শ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এখনো আমাদের আইনি কাঠামোতে আমরা যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। এ ধরনের যেসব ঘাটতি আমাদের আইন ও বিধিতে আছে তা পূরণ করা জরুরি। এসব আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সড়কগুলো অধিকতর নিরাপদ হয়ে উঠবে। ২০২২ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে সিআইপিআরবি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মিল থাকলেও বাংলাদেশ পুলিশের দেওয়া তথ্যের পার্থক্য পাঁচ গুণ, রোড ক্রাশ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বৈজ্ঞানিক ও স্বীকৃত কোনো পদ্ধতি দেশে না থাকার কারণে প্রায়শই হতাহতের সংখ্যা ও তথ্য নিয়ে ভিন্নতা দেখা দেয়। তাই সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য ও উপাত্ত সঠিক উপায়ে সংগ্রহের জন্য বিশ্ব স্বীকৃত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি চালুর দাবি জানাই। এটি নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে সবাইকে সহযোগিতা করবে। এছাড়া নিরাপদ সড়কের জন্য ন্যাশনাল রোড সেইফটি অথোরিটি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো বিশ্বব্যাপী রোড সেইফটি সপ্তাহ পালন করে থাকে। চলতি বছর ১৫-২১ মে পর্যন্ত সপ্তমবারের মতো এ রোড সেইফটি সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে টেকসই যাতায়াত।