| |
               

মূল পাতা জাতীয় কৃষি পণ্য আমদানি এড়াতে সাশ্রয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী


কৃষি পণ্য আমদানি এড়াতে সাশ্রয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী


রহমত নিউজ     13 February, 2023     09:27 AM    


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনা করে  মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।  

আজ  (১৩ ফেব্রুয়ারি) সোমবার ‘কৃষিবিদ দিবস-২০২৩’  উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন,  কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ‘কৃষিবিদ দিবস- ২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে জেনে তিনি আনন্দিত। কৃষিবিদ দিবসে প্রধানমন্ত্রী  দেশের সব কৃষিবিদ, কৃষক এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকবিলা করে অর্থনীতির চাকা স্বাভাবিক হতে না হতেই, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও বিভিন্নমুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে নির্দিষ্ট কয়েকটি কৃষি পণ্য ছাড়া অধিকাংশই আমদানি করতে হয়। এ অবস্থায় অন্তত কৃষি পণ্য যেন আমদানি না করতে হয়, সে জন্য জনগণকে সর্বস্তরে সাশ্রয়ী হতে হবে এবং দেশে আবাদযোগ্য এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, সে ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। ’ 

শেখ হাসিনা বলেন,  ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদের চাকরি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারির এই দিনটিতে কৃষিবিদ দিবস উদযাপন তাৎপর্যপূর্ণ। জাতির পিতার এ ঘোষণাটি ছিল এ দেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিদের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক। ফলে অধিকতর মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষিশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হন ‘ 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন- ‘দেশে কৃষি বিপ্লব সাধনের জন্য কৃষকদের কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা হবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ কিন্তু নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টার  মাধ্যমেই দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতির দ্রুত পুনর্গঠনের নিশ্চয়তা বিধান করা  যাবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান শাসনামলে দায়েরকৃত ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের অব্যাহতি দেন এবং সুদসহ ঋণ মওকুফ করেন বঙ্গবন্ধু। পরিবার প্রতি জমির মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে উদ্বৃত্ত জমি খাস করে  ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেন এবং ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে ১০০টি খাদ্য গুদাম নির্মাণ করেন। সকল কৃষি জমি সমবায়ের অধীনে একীভূত করে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদন ৫ গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেন। ’

প্রতি ইঞ্চি জমির উপযোগিতা অনুযায়ী উৎপাদন নিশ্চিত করতে কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পর্কিত সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষিবিদগণকে আরও বেশি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সার ডিলার নিয়োগ নীতিমালা-২০০৯, জাতীয় কৃষিনীতি ২০১৮, জাতীয় জৈব কৃষি নীতি ২০১৬, সমন্বিত ক্ষুদ্রসেচ নীতিমালা-২০১৭, জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতি ২০২০, বাংলাদেশ উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা ২০২০ সহ বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। সার-সেচসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। কৃষি প্রণোদনা ও কৃষিঋণের ব্যবস্থা করাহচ্ছে। প্রায় ২ কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ এবং প্রায় ১ কোটি কৃষকের ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ’  

প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ‘কৃষিতে ই-কৃষির প্রবর্তন করা হয়েছে। কৃষি সেবাকে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে  কৃষি বাতায়ন। ’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে, অধিক প্রকার ফসল উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ এই নির্দেশনা পালনে কৃষিবিদগণের কর্মতৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে।  তিনি বলেন , আমরা বিদ্যমান কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের অভিযাত্রায় কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ এবং নীতি-সহায়তা ও প্রণোদনা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের কৃষি অনুকূল নীতি ও প্রণোদনায় কৃষক ও কৃষিবিদদের মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। ’ কৃষিখাত ভিত্তিক জাতীয় লক্ষ্য এবং পরিকল্পনাকে দীর্ঘমেয়াদি সংহত কৌশলের সঙ্গে সমন্বিত করে সবাই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে  প্রত্যাশা করেন তিনি।  

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকবিলা করে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতারস্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।  প্রধানমন্ত্রী  কৃষিবিদ দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।