রহমত নিউজ 02 February, 2023 10:35 AM
টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে কৃষি উন্নয়নের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ‘আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলা’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো কৃষি। টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে কৃষি উন্নয়নের বিকল্প নেই। কৃষিপ্রধান দেশ হলেও পাকিস্তানি শাসকদের ভ্রান্ত নীতি এবং অবহেলার কারণে এ দেশের সিংহভাগ মানুষের দু’বেলা ভাত জুটতো না। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাই কৃষিকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।’
তিনি বলেন, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া ২-৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ঢাকায় তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলা আয়োজন করছে জেনে তিনি আনন্দিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ২০০৯ সাল থেকে কৃষির আধুনিকীকরণ ও সার্বিক উন্নয়নে কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা আধুনিক কৃষি শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি করেছি। কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছি। কৃষি বাতায়ন, কৃষক-বন্ধু ফোন সেবা (৩৩৩১), কৃষকের জানালা, কৃষি কল সেন্টার (১৬১২৩) ইত্যাদির মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি তথ্য আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, এতে বন্যা, খরা ও লবণাক্ততাসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জেনোম সিকুয়েন্স উন্মোচন ও মেধাস্বত্ব অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমাদের সরকার সার, বীজসহ সব কৃষি উপকরণের মূল্য হ্রাস, কৃষকদের সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণসুবিধা প্রদান, ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগসহ তাদের নগদ সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। পাওয়ার টিলার, হারভেস্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দামে কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।
মেলায় প্রদর্শিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দেশের কৃষক সমাজকে কৃষি আধুনিকীকরণ এবং যান্ত্রিকীকরণে উৎসাহিত করবে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মেলার মাধ্যমে কৃষি ও কৃষিপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট গবেষক, প্রস্তুতকারক, আমাদানিকারক প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ও দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক তথ্য এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ ঘটবে। ফলে এ মেলা দেশের কৃষিখাতে টেকসই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
প্রধানমন্ত্রী ১১তম এগ্রো টেক বাংলাদেশ-২০২৩ প্রদর্শনীর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।